বৃহস্পতিবার, ২৮ আগস্ট ২০২৫, ১৩ ভাদ্র ১৪৩২

ডেঙ্গু আক্রান্ত আরও ৩১৭ জন হাসপাতালে

কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ০৬ জুলাই ২০২৫, ০৬:০৫ পিএম
ছবি : কালবেলা গ্রাফিক্স
ছবি : কালবেলা গ্রাফিক্স

গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ৩১৭ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তবে এ সময়ে কোনো মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি।

রোববার (৬ জুলাই) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, গতকাল শনিবার সকাল ৮টা থেকে রোববার সকাল ৮টা পর্যন্ত সময়ের মধ্যে বরিশাল বিভাগে সবচেয়ে বেশি ১২৭ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছেন।

এতে বলা হয়, এই সময়ে চট্টগ্রাম বিভাগে ৭০ জন ছাড়াও ঢাকা বিভাগে ৫২ জন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ২৬ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ২২ জন, খুলনা বিভাগে ১৩ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ৭ জন ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকে রোববার (৬ জুলাই) পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মোট ৪৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুর সংখ্যায় শীর্ষে রয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, যেখানে ২০ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এ ছাড়া বরিশাল বিভাগে ডেঙ্গুতে ১২ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৪ জন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ৩ জন, খুলনা ও রাজশাহী বিভাগে ২ জন করে মোট ৪ জন এবং ময়মনসিংহ ও ঢাকা বিভাগে ১ জন করে মোট ২ জনের মৃত্যু হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সচেতনতা এবং স্থানীয় পর্যায়ে কার্যকর উদ্যোগ জোরদার করা প্রয়োজন।

উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১ লাখ ১ হাজার ২১৪ জন, যেখানে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়ায় ৫৭৫ জনে। তার আগের বছর, ২০২৩ সালে, পরিস্থিতি ছিল আরও ভয়াবহ। ওই বছরে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন এবং মৃত্যুবরণ করেন ১ হাজার ৭০৫ জন, যা দেশের ইতিহাসে ডেঙ্গুজনিত সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড।

মন্তব্য করুন

হার্টের যত্নে যেসব খাবার খাবেন
বাংলাদেশে হৃদরোগ এখন সাধারণ একটি সমস্যা। ব্যস্ত জীবন, ভেজাল খাবার আর অস্বাস্থ্যকর অভ্যাসের কারণে হৃদরোগে আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে। কিন্তু আজ আপনাদের জন্য একটি ভালো খবর আছে।  বিজ্ঞান বলছে আমরা কী খাচ্ছি, সেটার ওপর অনেকটাই নির্ভর করে আমাদের হার্টের সুস্থতা। তাই স্বাস্থ্যকর, সঠিক এবং ভালো খাবার খেয়ে কীভাবে নিজের হার্টের যত্ন নেবেন, চলুন জেনে নেই।  কিছু খাবার নিয়মিত খেলে আপনার হৃদয় ভালো থাকবে বলেই জানাচ্ছে বর্তমান পুষ্টিবিদরা। বাংলাদেশে সহজলভ্য এবং হৃদরোগ প্রতিরোধে সহায়ক এমন কিছু খাবার সম্পর্কে জেনে নিন, যা খেলে আপনি নিজের হার্টের যত্ন নিতে পারবেন সহজেই। চলুন পরিচিত হই সেই খাবারগুলোর সঙ্গে, যেগুলো আমাদের জন্য সহজলভ্য তবে হার্টের যত্নে বিশেষ উপকারী-  ১. মাছ (রুই, ইলিশ, পাবদা ইত্যাদি) কেন ভালো : রুই, ইলিশ, পাবদা- এসব মাছে ওমেগা-৩ চর্বি থাকে, যা রক্তচাপ কমাতে আর হৃদয়কে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। পরামর্শ : ভাজা না খেয়ে মাছ সেদ্ধ, ঝোল বা ভাঁপে রান্না করে খাওয়াই ভালো। ২. ডাল (মসুর, মুগ, ছোলা) কেন ভালো : ডালে আছে প্রচুর ফাইবার আর প্রোটিন। এটা খেলে খারাপ কোলেস্টেরল কমে এবং রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে থাকে।   পরামর্শ : মাংসের বদলে সপ্তাহে কয়েকদিন ডাল দিয়ে ভাত খান। ৩. শাক-সবজি (পুঁই, লাল শাক, কলমি শাক) কেন ভালো : পুঁই শাক, লাল শাক আর কলমি শাকে আছে ভিটামিন, ফাইবার আর পটাশিয়াম। এগুলো হৃদয়কে শক্ত রাখে এবং রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।   পরামর্শ : কম তেলে আর কম লবণে শাক রান্না করুন, যেন পুষ্টিগুণ নষ্ট না হয়। ৪. ফল (পেয়ারা, পেঁপে, কলা, আমলা) কেন ভালো : পেয়ারা, পেঁপে, কলা আর আমলাতে আছে প্রচুর ভিটামিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এগুলো হৃদয় ভালো রাখতে খুব উপকারী। পরামর্শ : চিপস বা মিষ্টির বদলে ফল খাওয়ার অভ্যাস করুন। ৫. সরিষার তেল কেন ভালো : সরিষার তেলে ভালো চর্বি থাকে যা হৃদয়ের জন্য উপকারী। তবে পরিমাণে খাওয়া জরুরি। পরামর্শ : অল্প তেলে রান্না করুন এবং বেশি গরম না করে তেল ব্যবহার করুন। ৬. লাল চাল কেন ভালো : লাল চাল বা আধা সিদ্ধ চালে বেশি ফাইবার থাকে। এটি রক্তে চিনি ও কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। পরামর্শ : ধীরে ধীরে সাদা চালের সঙ্গে লাল চাল মিশিয়ে খাওয়া শুরু করুন। ৭. বাদাম ও বীজ (চিনাবাদাম, তিল, তিসি বীজ) কেন ভালো : চিনাবাদাম, তিল আর তিসি বীজে আছে ভালো চর্বি, ম্যাগনেসিয়াম আর ফাইবার। নিয়মিত খেলে হৃদয় সুস্থ থাকে। পরামর্শ : লবণ ছাড়া অল্প বাদাম খেতে পারেন। তিসি বীজ গুঁড়ো করে ভাত বা তরকারিতে মেশাতে পারেন। ৮. রসুন ও হলুদ কেন ভালো : রসুন রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। হলুদে আছে প্রদাহ কমানোর উপাদান। দুইটাই আমাদের ঘরোয়া রান্নায় ব্যবহার হয়। পরামর্শ : প্রতিদিনের রান্নায় রসুন ও হলুদ ব্যবহার করুন, তবে কম তেলে রান্না করুন। নিজের হার্ট ভালো রাখার জন্য দামি খাবার দরকার নেই। আমাদের ঘরের পাশের বাজারেই পাওয়া যায় এমন অনেক খাবার আছে যা খেলে আপনার হার্ট সুস্থ থাকবে। একটু বুঝে খেলে, কম তেল, কম লবণ আর কম ভাজা খাবার খেলেই পাবেন অনেক উপকার।
হার্টের যত্নে যেসব খাবার খাবেন
স্বাস্থ্য পরামর্শ / হার্ট ভালো রাখতে যেসব বিষয় খেয়াল রাখা দরকার
হৃদরোগকে নীরব ঘাতক বলা হয়। হৃদরোগের শঙ্কামুক্ত থাকতে ত্রিশোর্ধ্ব সবার নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা উচিত। উত্তরাধিকার সূত্রেও কেউ হৃদরোগে আক্রান্ত হতে পারেন। হৃদরোগ থেকে প্রতিকারের জন্য মানসিক চাপ কমাতে এবং দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করতে হবে। অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস মানুষকে স্বাস্থ্যঝুঁকির দিকে ঠেলে দেয়। তখনই হজমের জন্য ব্যবহৃত এনজাইমগুলো হজমে ব্যাঘাত ঘটায়। যাদের হৃদরোগ আছে, তারা জগিং করলে দ্রুত ক্লান্ত হয়ে পড়েন এবং জয়েন্টেও ব্যথা অনুভব করেন। হৃদরোগের ঝুঁকিমুক্ত থাকতে হলে হার্ট সুস্থ রাখতে হবে। সুস্থ হার্টের জন্য করণীয়: নিয়মিত ব্যায়াম করুন—প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট ব্যায়াম করা উচিত। হাঁটা, দৌড়ানো, সাঁতার কাটা বা সাইকেল চালানোর মতো ব্যায়াম হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে পারে। স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ—ফল, সবজি, শস্য এবং মাছ বেশি করে খান। প্রক্রিয়াজাত খাবার, ফাস্ট ফুড এবং অতিরিক্ত চিনি ও লবণযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। পর্যাপ্ত ঘুমানো প্রয়োজন—প্রতিদিন ৭ থেকে ৯ ঘণ্টা ঘুমানো স্বাস্থ্যের জন্য খুব জরুরি। ঘুমের অভাব শরীরের ওপর খারাপ প্রভাব ফেলে। ধূমপান ও মদ্যপান ত্যাগ করুন—ধূমপান ও মদ্যপান হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। তাই এগুলো সম্পূর্ণরূপে বর্জন করতে হবে। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন—অতিরিক্ত ওজন হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। তাই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করতে হবে। মানসিক চাপ কমান—মানসিক চাপ হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। তাই মানসিক চাপ কমাতে যোগ, ধ্যান বা পছন্দের কাজ করতে পারেন। নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান—বছরে একবার হৃদরোগের পরীক্ষা করানো উচিত। এতে রোগ শনাক্ত করা সহজ হয়। পর্যাপ্ত পানি পান করুন—প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা শরীরকে সতেজ রাখে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। হার্ট অ্যাটাক হলে করণীয়: রোগীকে প্রথমে শুইয়ে দিতে হবে। এরপর জিহ্বার নিচে একটি অ্যাসপিরিন ট্যাবলেট রাখতে হবে। যদি পাওয়া যায় তবে অ্যাসপিরিনের পাশাপাশি একটি সরবিট্রেট ট্যাবলেট রাখতে হবে। এরপর দ্রুত হাসপাতালে নেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। কেননা প্রথম এক ঘণ্টার মধ্যেই হার্টের মাংসপেশির সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়। নিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস, হাঁটাহাঁটি এবং আখরোট খাওয়ার মাধ্যমে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। হৃদরোগের জন্য ভালো খাবার ফল ও সবজি। তৈলাক্ত খাবার হৃদরোগের জন্য বেশি ক্ষতিকর। নিয়মিত রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে সুগার এবং কোলেস্টেরলের স্বাভাবিক মাত্রা সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হবে। রক্তচাপ পরিমাপও জরুরি।
হার্ট ভালো রাখতে যেসব বিষয় খেয়াল রাখা দরকার