বৃহস্পতিবার, ২৮ আগস্ট ২০২৫, ১৩ ভাদ্র ১৪৩২

এজবাস্টনে পরিসংখ্যানেই লেখা ভারতের রেকর্ডের গল্প

স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশ : ০৭ জুলাই ২০২৫, ১১:০৫ এএম
ভারতের জয়ের তিন নায়ক গিল (ডানে), আকাশ (মাঝে) ও সিরাজ (বাঁয়ে)। ছবি : সংগৃহীত
ভারতের জয়ের তিন নায়ক গিল (ডানে), আকাশ (মাঝে) ও সিরাজ (বাঁয়ে)। ছবি : সংগৃহীত

এজবাস্টনে ম্যাচটা যেন ছিল ভারতের ক্রিকেট ইতিহাসের এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা। যেখানে তরুণ অধিনায়ক শুভমান গিল হয়ে উঠলেন রেকর্ড বইয়ের এক উজ্জ্বল নাম, আর পেসার আকাশ দীপ ঢেলে দিলেন স্বপ্নের পারফরম্যান্সে গড়া এক ম্যাচ। চলুন দেখা যাক পরিসংখ্যান যেভাবে দেখছে ভারতের সেই ঐতিহাসিক জয়

৩৩৬ রানের বিশাল জয়

বিদেশের মাটিতে ভারতের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ। এর আগে ২০১৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৩১৮ রানে হারিয়েছিল বিরাট কোহলির দল। সবমিলিয়ে এটি ভারতের টেস্ট ইতিহাসে চতুর্থ বড় জয় এবং ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয়, ২০২৪ সালে রাজকোটে পাওয়া ৪৩৪ রানের জয়কে বাদ দিলে।

ইতিহাস গড়লেন গিল

মাত্র ২৫ বছর ৩০১ দিন বয়সে বিদেশের মাটিতে টেস্ট জয়ে অধিনায়ক হিসেবে ভারতের ইতিহাসে সবচেয়ে কম বয়সী গিল। পেছনে ফেলেছেন সুনীল গাভাস্কারকে, যিনি ১৯৭৬ সালে নিউজিল্যান্ডে ২৬ বছর বয়সে নেতৃত্ব দিয়ে জিতেছিলেন। সব মিলিয়ে গিল ভারতের হয়ে টেস্ট জয়ে নেতৃত্ব দেওয়া চতুর্থ সবচেয়ে তরুণ—তার আগে ছিলেন পাটৌদি, শাস্ত্রী ও শচীন।

এজবাস্টনে ১৯ ম্যাচের অপেক্ষার অবসান

এশিয়ান দলগুলোর জন্য এজবাস্টন যেন ছিল ব্যর্থতার প্রতীক। ১৯টি টেস্ট খেলে এবারই প্রথম কোনো এশিয়ান দল জয় পেল এই ভেন্যুতে। ভারতের জন্য এটি ছিল নবম ম্যাচ—সাতটি হারে, একটি ড্র, আর এবার সেই বহু কাঙ্ক্ষিত জয়।

আকাশ দীপের ‘দীপজ্বালা’

৪১.১ ওভার বল করে ১০ উইকেট—১০/১৮৭। আকাশ দীপ ছুঁয়েছেন এক অনন্য উচ্চতা। ইংল্যান্ডে ভারতের হয়ে এক টেস্টে সবচেয়ে বেশি উইকেট নেওয়ার রেকর্ড এখন তার দখলে, ভেঙেছেন চেতন শর্মার ১৯৮৬ সালের ১০/১৮৮। বিদেশে ভারতের হয়ে শেষবার টেস্টে ১০ উইকেট পেয়েছিলেন ইশান্ত শর্মা (২০১১, বার্বাডোসে), আর দেশ-বিদেশ মিলিয়ে শেষবার পেয়েছিলেন উমেশ যাদব (২০১৮, হায়দরাবাদে)।

সিরাজ-আকাশ দীপ: ভয়ংকর জুটি

নতুন বল হাতে আকাশ দীপ ও মোহাম্মদ সিরাজ দু’জন মিলে নিয়েছেন ১৭টি উইকেট। ভারতের ইতিহাসে টেস্টে নতুন বল হাতে ওপেনিং জুটি হিসেবে যৌথভাবে সর্বোচ্চ—এর আগে এমনটা ঘটেছিল ২০০৫ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে (ইরফান-পাঠান ও জাহির খান) এবং ২০১৯ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে (ইশান্ত-উমেশ)।

এক ম্যাচে ভারতের রান ১০১৪!

৫৮৭ ও ৪২৭/৬—এই দুই ইনিংস মিলিয়ে ভারতের সংগ্রহ ১০১৪ রান, যা টেস্ট জয়ে কোনো দলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংগ্রহ। ১৯৩৪ সালের ওভাল টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার ১০২৮ রানের রেকর্ডই শুধু এগিয়ে।

পেছনে দাঁড়িয়ে ঝড় তুললেন স্মিথ

জেমি স্মিথের ২৭২ রান (১৮৪* ও ৮৮) ইংল্যান্ডের ইতিহাসে উইকেটরক্ষকদের মধ্যে এক ম্যাচে সর্বোচ্চ। বিশ্ব ক্রিকেটে উইকেটরক্ষক হিসেবে এটি তৃতীয় সর্বোচ্চ ইনিংস—শীর্ষে আছেন জিম্বাবুয়ের অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার।

ব্যাজবল বিপর্যস্ত

বেন স্টোকস ও ব্রেন্ডন ম্যাককালামের অধীনে ইংল্যান্ড ব্যাটাররা কখনও এতটা রক্ষণাত্মক হননি। চতুর্থ ইনিংসে তাঁদের ৫৪.৭% বল ছিল ডিফেন্স বা লেফট—ব্যাজবল যুগে এটিই সর্বোচ্চ। তাতেও লাভ হয়নি—ইংল্যান্ডের ৭ ব্যাটার ফিরেছেন শূন্য রানে, যা টেস্ট ইতিহাসে ইংল্যান্ডের প্রথম এবং যৌথভাবে সর্বোচ্চ।

এজবাস্টনের ঐতিহাসিক ম্যাচটা ভারতীয় ক্রিকেটের জন্য এক 'স্টেটমেন্ট' জয়। নেতৃত্বে গিল, আক্রমণে দীপ, আর রানে ভাসছে গোটা দল—ভারতের ভবিষ্যৎ এখন আলোয় মোড়ানো।

মন্তব্য করুন

চল্লিশে পা দিলেন ‘ক্যাপ্টেন কুল’ ধোনি
ভারতীয় ক্রিকেটের ইতিহাসে এক অনন্য নাম মহেন্দ্র সিং ধোনি। বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক, ‘ক্যাপ্টেন কুল’, চেন্নাই সুপার কিংসের অদ্বিতীয় নেতা—যাকে ভালোবেসে দক্ষিণের ভক্তরা ডাকেন ‘থালা’। সোমবার জীবনের ৪৪ বছরে পা রাখলেন এই কিংবদন্তি।   ২০০৪ সালে জাতীয় দলের জার্সি গায়ে চড়ানো সেই দীর্ঘকেশী যুবককে দেখে কে ভেবেছিল, একদিন তিনি হয়ে উঠবেন বিশ্বের সেরা উইকেটকিপার-ব্যাটারদের একজন! ধোনি শুধু উইকেটের পেছনে গ্লাভস হাতে দারুণ ছিলেন না, ব্যাট হাতে ভারতের মিডল অর্ডারের স্তম্ভও হয়ে উঠেছিলেন। দ্রুত স্টাম্পিং আর বিখ্যাত ‘হেলিকপ্টার শট’ আজও ভক্তদের প্রিয়।   ধোনির ঝুলিতে রয়েছে ১৭,২৬৬ আন্তর্জাতিক রান, ৮২৯ ডিসমিসাল ও ৫৩৮টি ম্যাচ। ওডিআই ফরম্যাটে ধোনি ছিলেন সবচেয়ে ভয়ংকর। ৩৫০ ম্যাচে ১০,৭৭৩ রান, গড় ৫০.৫৭। ১০টি সেঞ্চুরি, ৭৩টি হাফসেঞ্চুরি আর সর্বোচ্চ ইনিংস ১৮৩*। নিচের দিকে ব্যাট করতে নেমেও ১০ হাজারের বেশি রান এবং ৫০-এর ওপরে গড়—এটাই প্রমাণ করে তিনি কত বড় মাপের ক্রিকেটার।   অধিনায়ক হিসেবে ধোনি ভারতের হয়ে ২০০টি ওয়ানডে ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়েছেন, যার মধ্যে জয় এসেছে ১১০টিতে। ২০১১ বিশ্বকাপ এবং ২০১৩ চ্যাম্পিয়নস ট্রফি জিতিয়ে ভারতকে তিনি এনে দিয়েছেন বিশ্ব ক্রিকেটের সর্বোচ্চ গৌরব।   টি-টোয়েন্টিতেও ছিলেন সমান ধারাবাহিক। ৯৮ ম্যাচে ১,৬১৭ রান, গড় ৩৭.৬০। ২০০৭ সালে ভারতের প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ের পেছনেও ছিল তার নির্ভীক নেতৃত্ব।   টেস্ট ক্রিকেটে ধোনি ৯০ ম্যাচে ৪,৮৭৬ রান করেছেন, গড় ৩৮.০৯। অধিনায়ক হিসেবে ভারতের হয়ে ৬০টি টেস্টে নেতৃত্ব দিয়ে ২৭টিতে জয় তুলে নিয়েছেন। তার অধিনায়কত্বেই ভারত প্রথমবারের মতো আইসিসি টেস্ট র‍্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষে উঠে আসে এবং অস্ট্রেলিয়াকে হোয়াইটওয়াশের কৃতিত্ব অর্জন করে।   ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের মঞ্চেও ধোনি অনন্য। আইপিএলে ৫,৪৩৯ রান, ২৭৮ ম্যাচে গড় ৩৮.৩০। রয়েছে ৫টি আইপিএল শিরোপা ও ২টি চ্যাম্পিয়নস লিগ শিরোপা। চেন্নাই সুপার কিংসকে তার নামের সঙ্গে যুক্ত করে তুলেছেন বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় ফ্র্যাঞ্চাইজি হিসেবে।   রাঁচির এই ছেলে দেশের জন্য দিয়েছেন নিজের সবটুকু। মাঠে তার ঠান্ডা মাথা, অনন্য কৌশল, শেষ মুহূর্তে ছক্কা হাঁকানোর দৃশ্য—সবই আজও ক্রিকেটপ্রেমীদের চোখে ভাসে।   আজ জন্মদিনে ধোনির জন্য দেশ-বিদেশের কোটি কোটি ভক্তের শুভকামনা। ক্রিকেট বিশ্বে তিনি থেকে যাবেন চিরকালীন ‘থালা’, এক অবিস্মরণীয় নাম হিসেবে।
চল্লিশে পা দিলেন ‘ক্যাপ্টেন কুল’ ধোনি
নতুন প্রধান নির্বাহী পেল আইসিসি
বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসির দায়িত্বে এলেন এক নতুন মুখ—সঞ্জোগ গুপ্তা। সোমবার (৭ জুলাই) তাকে আইসিসির সপ্তম প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ভারতীয় বংশোদ্ভূত এই ক্রীড়া প্রশাসক এর আগে জিওস্টার-এর ‘স্পোর্টস অ্যান্ড লাইভ এক্সপেরিয়েন্স’ বিভাগের সিইও হিসেবে কাজ করছিলেন। আইসিসির চেয়ারম্যান জয় শাহ জানান, ‘সঞ্জোগ গুপ্তা ক্রীড়া কৌশল ও বাণিজ্যিকীকরণে বিশাল অভিজ্ঞতা নিয়ে আইসিসিতে আসছেন। তার প্রযুক্তিপ্রেম ও ভক্তদের দৃষ্টিকোণ বোঝার ক্ষমতা আইসিসির লক্ষ্যপূরণে দারুণ ভূমিকা রাখবে।’ গুপ্তা দায়িত্ব নিচ্ছেন জিওফ অ্যালারডাইসের জায়গায়, যিনি ২০২০ সালে অন্তর্বর্তীকালীনভাবে দায়িত্ব নেওয়ার পর ২০২১ সালে পূর্ণকালীন সিইও হন এবং চলতি বছরের জানুয়ারিতে সরে দাঁড়ান। আইসিসির মতে, এই পদের জন্য প্রায় ২৫টি দেশের ২৫০০ জনের বেশি আবেদন করেছিলেন। শেষ পর্যন্ত ১২ জনের শর্টলিস্ট করে একটি বিশেষ মনোনয়ন কমিটি যাচাই-বাছাই করে একচেটিয়াভাবে সঞ্জোগ গুপ্তার নাম সুপারিশ করে, যা আইসিসির পূর্ণ বোর্ডে অনুমোদিত হয়। গুপ্তা নিজেই বলেছেন, ‘বিশ্বব্যাপী প্রায় ২০০ কোটির মতো সমর্থন পাওয়া ক্রিকেট এখন অভাবনীয় প্রসারণের দ্বারপ্রান্তে। ২০২৮ লস অ্যাঞ্জেলেস অলিম্পিকে ক্রিকেটের অন্তর্ভুক্তি ও প্রযুক্তির দ্রুত অগ্রগতি এই খেলার বিস্তারে নতুন গতি আনবে।’ ২০১০ সালে স্টার ইন্ডিয়ায় যোগ দিয়ে যাত্রা শুরু। এরপর কনটেন্ট, প্রোগ্রামিং এবং স্ট্র্যাটেজি বিভাগ পেরিয়ে ২০২০ সালে হয়ে ওঠেন স্টার স্পোর্টসের প্রধান। গুপ্তার নেতৃত্বেই বহুভাষিক সম্প্রচার, ডিজিটাল-প্রথম কভারেজ এবং নারী ক্রীড়ার ওপর বিশেষ জোর দিয়ে ভারতে খেলাধুলার দর্শনই পাল্টে দেওয়া শুরু হয়। ২০২৪ সালে ভায়াকম১৮ ও ডিজনি-স্টার একীভূত হয়ে জিওস্টার গঠিত হলে, তাকে এই নতুন ক্রীড়া প্রতিষ্ঠানটির সিইও করা হয়। গুপ্তার মূল কৃতিত্বগুলো: আইপিএল ও আইসিসি ইভেন্টগুলোকে নতুন মাত্রায় নিয়ে যাওয়া প্রো কাবাডি, আইএসএলের মতো ঘরোয়া লিগের জনপ্রিয়তা গড়ে তোলা প্রিমিয়ার লিগ ও উইম্বলডনের মতো আন্তর্জাতিক ক্রীড়ার দর্শকভিত্তি বাড়ানো নারী ক্রীড়া ও প্রযুক্তিনির্ভর কাভারেজে অগ্রণী ভূমিকা রাখা আইসিসির হাল ধরলেন এমন একজন, যিনি মিডিয়া ও খেলাধুলার সংযোগে ভবিষ্যতের দিশা খুঁজে পেয়েছেন বহু আগেই। সঞ্জোগ গুপ্তার নেতৃত্বে আইসিসির সামনে সুযোগ—একটি আধুনিক, বৈশ্বিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ নির্মাণের। এখন দেখার পালা—গুপ্তার ভিশন বাস্তবের মাঠে কতটা সফল হয়।
নতুন প্রধান নির্বাহী পেল আইসিসি
এজবাস্টনে ভারতের ঐতিহাসিক জয়
এজবাস্টনে নিজেদের টেস্ট ইতিহাসে দীর্ঘদিন ধরে জয়ের মুখ দেখেনি ভারত। সেই ‘অভিশপ্ত’ ভেন্যুতেই এবার রেকর্ড গড়ে ইংল্যান্ডকে ৩৩৬ রানে হারিয়ে সিরিজে ১-১ সমতা ফিরিয়েছে শুভমান গিলের দল। এটি ভারতের ইতিহাসে বিদেশের মাটিতে সবচেয়ে বড় ব্যবধানে টেস্ট জয়। এই ঐতিহাসিক জয়ে প্রধান নায়ক তরুণ পেসার আকাশ দীপ। দ্বিতীয় ইনিংসে ৯৯ রানে ৬ উইকেট এবং ম্যাচে মোট ১০ উইকেট নিয়ে ইংল্যান্ডের ব্যাটিং ভেঙে দিয়েছেন তিনি। টেস্টে ইংল্যান্ডের মাটিতে এটাই কোনো ভারতীয় বোলারের সেরা ম্যাচ ফিগার। এজবাস্টনে জয়ের হতাশা দূর করেই শুধু নয়, ভারত প্রথম এশিয়ান দল হিসেবে এই ভেন্যুতে টেস্ট জয়ের কীর্তি গড়েছে। ভারতের বিশাল জয়ের পেছনে আরেকটি বড় ভূমিকা অধিনায়ক শুভমান গিলের পারফরম্যান্স। প্রথম ইনিংসে ২৬৯ এবং দ্বিতীয় ইনিংসে ১৬১ রান করে এক টেস্টে ৪৩০ রানের অসাধারণ ইনিংস উপহার দেন তিনি। ভারতের কোনো অধিনায়ক হিসেবে এটিই সর্বোচ্চ স্কোর এবং টেস্ট ইতিহাসে ব্যক্তিগতভাবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রহ এক ম্যাচে। প্রথম ইনিংসে গিলের সঙ্গে ২০৩ রানের জুটি গড়েন রবীন্দ্র জাদেজা (৮৯) এবং ওয়াশিংটন সুন্দর (৭৭)। ভারতের প্রথম ইনিংস থেমেছিল ৫৮৭ রানে। জবাবে ইংল্যান্ড ৮৪/৫ থেকে জেমি স্মিথ (১৮৪*) ও হ্যারি ব্রুকের (১৫৮) জুটিতে ঘুরে দাঁড়ালেও ৪০৭ রানে গুটিয়ে যায়। সিরাজ ৬টি এবং আকাশ দীপ ৪টি উইকেট নেন। ১৮০ রানের লিড নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে আবারও ব্যাটিং দাপট দেখায় ভারত। গিলের ১৬১, জাদেজার ৬৯* ও পান্তের ৬৫ রানে দল থামে ৪২৭/৬-এ। ইংল্যান্ডের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ৬০৮। চতুর্থ দিন শেষে ৩ উইকেট হারায় স্বাগতিকরা। পঞ্চম দিন বৃষ্টির কারণে খেলা শুরু হয় দেরিতে। কিন্তু তাতেও ভারতীয় পেস আক্রমণ থেমে থাকেনি। আকাশ দীপ অলি পোপ ও হ্যারি ব্রুককে দ্রুত ফিরিয়ে দেন। স্মিথ একা লড়াই করলেও শতক পাননি, থামেন ৮৮ রানে। ইংল্যান্ড অলআউট হয় ২৭১ রানে। এই জয় সিরিজে ভারতকে সমতায় ফেরাল এবং লর্ডস টেস্টের আগে দিল আত্মবিশ্বাসের জ্বালানি। এজবাস্টনের 'অভিশাপ' ঘুচে যাওয়ার সঙ্গে নতুন যুগের সূচনা করলেন গিল-আকাশরা। সংক্ষিপ্ত স্কোর: ভারত: ৫৮৭ ও ৪২৭/৬ ডিক্লেয়ার ইংল্যান্ড: ৪০৭ ও ২৭১ ফল: ভারত জয়ী ৩৩৬ রান
এজবাস্টনে ভারতের ঐতিহাসিক জয়
অভিষেকেই ইতিহাস, ডাবল সেঞ্চুরিতে প্রোটিয়া অলরাউন্ডারের বিশ্বরেকর্ড
টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে প্রথম ইনিংসেই ডাবল সেঞ্চুরি? এমন কীর্তি ক্রিকেট ইতিহাসে হয়েছে মাত্র তিনবার। আর এখন সে তালিকার শীর্ষে উইয়ান মুল্ডার। দক্ষিণ আফ্রিকার এই অলরাউন্ডার বুলাওয়েতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টে অধিনায়কত্বের অভিষেকে অপরাজিত ২৬৪ রানে দিন শেষ করেছেন—যা এ ধরনের ম্যাচে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস। এর আগে ১৯৬৮ সালে ভারতের বিপক্ষে ক্রাইস্টচার্চে ২৩৯ রান করেছিলেন নিউজিল্যান্ডের গ্রাহাম ডাউলিং। সেটাই এতদিন ছিল অধিনায়কত্বে অভিষেক টেস্টে সর্বোচ্চ ইনিংসের রেকর্ড। আরও আগে ২০০৫ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের শিবনারায়ণ চন্দরপল দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে করেছিলেন ২০৩*। ২৭ বছর বয়সী মুল্ডারের এই অধিনায়কত্ব আসলে অনেকটাই আকস্মিক। নিয়মিত অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা হ্যামস্ট্রিং চোটে জিম্বাবুয়ে সফরে যাননি। সহ-অধিনায়ক এইডেন মার্করাম ও অভিজ্ঞ পেসার কাগিসো রাবাদাকেও বিশ্রামে রাখা হয়। এর ফলে প্রথম টেস্টে নেতৃত্ব পান স্পিনার কেশব মহারাজ। কিন্তু ব্যাটিংয়ের সময় কুঁচকিতে চোট পেয়ে দ্বিতীয় টেস্ট থেকে ছিটকে যান তিনিও। তখনই দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয় মুল্ডারের কাঁধে। আর সেই সুযোগের সর্বোত্তম ব্যবহারই করেছেন তিনি। ৩৪টি চার ও ৩টি ছক্কার মাধ্যমে দুর্দান্ত ইনিংস গড়ে প্রথম দিন শেষ করেছেন ২৬৪* রানে। দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর দাঁড়ায় ৯০ ওভারে ৪ উইকেটে ৪৬৫। এটাই প্রথম নয়। সিরিজের প্রথম টেস্টেও দারুণ ব্যাটিং করেছিলেন মুল্ডার, করেছিলেন ১৪৭ রান। ফলে তার ফর্ম বলছে, তিনি শুধু স্ট্যান্ড-ইন অধিনায়ক নন, দক্ষিণ আফ্রিকার টেস্ট ভবিষ্যতের অন্যতম বড় ভরসাও বটে। রেকর্ড বইয়ে নাম উঠলো যাদের অধিনায়কত্বের অভিষেকে ডাবল সেঞ্চুরি: উইয়ান মুল্ডার (দ.আফ্রিকা) – ২৬৪* বনাম জিম্বাবুয়ে, বুলাওয়ে ২০২৫ গ্রাহাম ডাউলিং (নিউজিল্যান্ড) – ২৩৯ বনাম ভারত, ১৯৬৮ শিবনারায়ণ চন্দরপল (ওয়েস্ট ইন্ডিজ) – ২০৩* বনাম দ.আফ্রিকা, ২০০৫ এছাড়া, মুল্ডার হলেন দক্ষিণ আফ্রিকার ইতিহাসে অধিনায়কত্বের অভিষেকে সেঞ্চুরি করা দ্বিতীয় ক্রিকেটার—১৯৫৫ সালে জ্যাকি ম্যাকগ্লু প্রথম এই কীর্তি করেছিলেন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। বিভিন্ন নিয়মিত তারকার অনুপস্থিতিতে হঠাৎ নেতৃত্ব পাওয়া মুল্ডার ব্যাট হাতে যা করে দেখিয়েছেন, তা শুধু রেকর্ড নয়—একটি বার্তাও। হয়তো ভবিষ্যতের নিয়মিত অধিনায়ক হওয়ার দিকেও তাকিয়ে আছেন তিনি। আর এমন অভিষেকের পর দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেট বিশ্বও নিশ্চয় তার নামটি একটু আলাদা করে মনে রাখবে।
অভিষেকেই ইতিহাস, ডাবল সেঞ্চুরিতে প্রোটিয়া অলরাউন্ডারের বিশ্বরেকর্ড
অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট দেখতে মাঠে ঢুকে পড়ল কুকুর
অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট দেখতে মাঠে ঢুকে পড়ল কুকুর
শেষ ওয়ানডের আগে শঙ্কায় শান্ত
শেষ ওয়ানডের আগে শঙ্কায় শান্ত
গ্লোবাল সুপার লিগে ফিরলেন সাকিব, রংপুরের বিপক্ষে মাঠে নামার সম্ভাবনা
গ্লোবাল সুপার লিগে ফিরলেন সাকিব, রংপুরের বিপক্ষে মাঠে নামার সম্ভাবনা
রোমাঞ্চকর জয়ের পর আইসিসি থেকে সুখবর পেলেন মিরাজরা
রোমাঞ্চকর জয়ের পর আইসিসি থেকে সুখবর পেলেন মিরাজরা