শুক্রবার, ২৯ আগস্ট ২০২৫, ১৪ ভাদ্র ১৪৩২

করাচিতে ভবন ধস, মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৯

কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ০৫ জুলাই ২০২৫, ০৯:৫৬ পিএম
আপডেট : ০৫ জুলাই ২০২৫, ১০:১২ পিএম
করাচির ধসে পড়া সেই ভবনে চলছে উদ্ধারকাজ। ছবি : সংগৃহীত
করাচির ধসে পড়া সেই ভবনে চলছে উদ্ধারকাজ। ছবি : সংগৃহীত

পাকিস্তানে করাচির লিয়ারি এলাকার পাঁচতলা একটি আবাসিক ভবন ধসে পড়ার ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৯ জনে দাঁড়িয়েছে। নিহতদের মধ্যে সাতজন নারী ও একজন শিশু রয়েছে। সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ জানিয়েছে, এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে অনেকে আটকে আছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। উদ্ধার অভিযান চলমান রয়েছে।

ঘটনাটি ঘটে শুক্রবার (৫ জুলাই) রাতে। রাতের অন্ধকারে হঠাৎ করেই ভবনটি সম্পূর্ণভাবে ধসে পড়ে, ফলে আশপাশের কিছু ভবনও আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দুর্ঘটনার পরপরই উদ্ধারকাজ শুরু করে পুলিশ, রেসকিউ ১১২২, রেঞ্জার্স ও অন্যান্য জরুরি সেবাদানকারী সংস্থাগুলো। ধ্বংসস্তূপ সরাতে ও জীবিতদের উদ্ধারে ব্যবহার করা হচ্ছে ভারী যন্ত্রপাতি।

সূত্র বলছে, শুক্রবার রাত পর্যন্ত উদ্ধারকর্মীরা ১৪টি মরদেহ উদ্ধার করে। শনিবার আরও ৫ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। প্রত্যেকটি মরদেহ উদ্ধার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এলাকাজুড়ে বাড়ছে শোক, উদ্বেগ এবং অপেক্ষার প্রহর। স্থানীয় বাসিন্দারা এখনো নিখোঁজ স্বজনদের খুঁজে ফিরছেন ধ্বংসস্তূপের আশপাশে।

রেসকিউ ১১২২ সিন্ধুর অপারেশন ইনচার্জ জানিয়েছেন, এ পর্যন্ত উদ্ধারকাজের প্রায় ৭০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। তবে ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো কেউ আটকে থাকতে পারেন বলে আশঙ্কা করছেন তিনি। উদ্ধার অভিযান সম্পূর্ণ শেষ হতে আরও কয়েক ঘণ্টা সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি।

করাচির দক্ষিণ অঞ্চলের ডেপুটি কমিশনার জাভেদ নবি জানিয়েছেন, ধসে পড়া ভবনটি তিন বছর আগে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছিল এবং দেড় মাস আগে আনুষ্ঠানিকভাবে একটি নোটিশও জারি করা হয়েছিল। তিনি বলেন, যদিও ভবনটিকে বিপজ্জনক ঘোষণা করা হয়েছিল, তারপরও যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, যা এই ভয়াবহ ট্র্যাজেডির কারণ হতে পারে।

তিনি আরও জানান, লিয়ারি এলাকায় এখনো ২২টি ভবন রয়েছে যেগুলো চরম ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত। এর মধ্যে ১৬টি ইতোমধ্যেই খালি করে ফেলা হয়েছে, এবং বাকি ভবনগুলো খালি করার প্রক্রিয়া চলছে।

ডেপুটি কমিশনার বলেন, পুরনো শহরাঞ্চলের সকল ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের বিরুদ্ধে শিগগিরই অভিযান চালানো হবে। একই সঙ্গে করাচির অন্যান্য এলাকাতেও পুরনো ভবনের সার্বিক অবস্থা যাচাই করে বড় পরিসরে একটি কৌশল প্রণয়ন করা হচ্ছে, যেন ভবিষ্যতে এ ধরনের মর্মান্তিক ঘটনা আর না ঘটে।

মন্তব্য করুন

কেন ব্রিকস সম্মেলনে যাচ্ছেন না শি জিনপিং
প্রথমবারের মতো ব্রিকসের বার্ষিক সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন না চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। এবার ব্রাজিলে অনুষ্ঠিত হচ্ছে এ সম্মেলন। এক দশকেরও বেশি সময় ধরে অন্যতম প্রধান নেতা হিসেবে ব্রিকসের বিভিন্ন সম্মেলনে সক্রিয় থাকলেও, এবার তার অনুপস্থিতি কূটনৈতিক অঙ্গনে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। খবর সিএনএন।  চীনের হয়ে এবারের সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী লি ছিয়াং। বিশ্লেষকদের মতে, শি’র অনুপস্থিতি যদিও তাৎপর্যপূর্ণ, তবে এতে চীন ব্রিকসের গুরুত্ব কমিয়ে দেখছে এমন কোনো বার্তা দেওয়া হয়নি। চলতি বছর সম্প্রসারিত ব্রিকসে নতুন ৫টি দেশ- মিসর, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইথিওপিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও ইরান যোগ দেওয়ার পর এটি প্রথম সম্মেলন। এই প্রেক্ষাপটে শি’র অনুপস্থিতি কূটনৈতিকভাবে লক্ষণীয়। কেন যাচ্ছেন না শি? চীনা প্রেসিডেন্টের না যাওয়ার পেছনে একাধিক কারণ দেখছেন বিশ্লেষকরা। সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক চোং জা ইয়ান বলেন, ‘ব্রিকস গোষ্ঠী চীনের কৌশলগত পররাষ্ট্রনীতির অংশ। তবে ট্রাম্প প্রশাসনের কঠোর নীতির ফলে চাপ কিছুটা কমায় শি এখন অভ্যন্তরীণ অর্থনৈতিক সংকটের দিকেই বেশি মনোযোগ দিচ্ছেন।’ চীনের অর্থনীতিতে ধীরগতির লক্ষণ, বেকারত্ব বৃদ্ধি, রিয়েল এস্টেট খাতের বিপর্যয়সহ নানা চ্যালেঞ্জের মধ্যে শি নিজ দেশে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার কৌশলে মন দিচ্ছেন বলেই ধারণা করা হচ্ছে। একইসঙ্গে, এই বছরের ব্রিকস সম্মেলন থেকে বড় কোনো অগ্রগতি বা নীতিগত পরিবর্তনের আশা কম- এটিও শি’র সশরীরে না যাওয়ার অন্যতম কারণ। অন্য নেতারাও অনুপস্থিত শি জিনপিং একমাত্র অনুপস্থিত নেতা নন। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনও এবার ভার্চুয়ালি অংশ নিচ্ছেন। ইউক্রেন যুদ্ধসংক্রান্ত অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকায় ব্রাজিল সফর করছেন না তিনি। এমন পরিস্থিতিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উপস্থিতি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। তিনি কেবল ব্রিকস সম্মেলনে নয়, রাষ্ট্রীয় সফরেও অংশ নিচ্ছেন। দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসাও সশরীরে অংশ নিচ্ছেন বলে নিশ্চিত করা হয়েছে। ইন্দোনেশিয়ার নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট প্রাবোও সুবিয়ান্তোও সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন। তবে অন্যান্য নতুন সদস্য দেশগুলোর অংশগ্রহণ এখনো পুরোপুরি নিশ্চিত হয়নি। চীন-ব্রাজিল সম্পর্কে প্রভাব পড়বে না চীনা প্রেসিডেন্টের অনুপস্থিতিকে ব্রাজিল নেতিবাচকভাবে দেখবে না বলেই ধারণা করা হচ্ছে। নভেম্বর মাসে জি২০ সম্মেলনে শি ব্রাজিল সফর করেছিলেন, অপরদিকে মে মাসে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা দা সিলভা চীন সফর করেছেন। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বেশ দৃঢ়ই রয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, শি’র অনুপস্থিতি কূটনৈতিক বার্তা না হয়ে বরং সময়োপযোগী বাস্তবতার প্রতিফলন। চীন এখন বৈশ্বিক প্রভাবের পাশাপাশি নিজেদের অর্থনৈতিক ভীত শক্ত করতে চায় এবং এই মুহূর্তে সেটাই তাদের অগ্রাধিকার। 
কেন ব্রিকস সম্মেলনে যাচ্ছেন না শি জিনপিং
কমিক বইয়ে ‘ভয়ংকর পরিণতির ভবিষ্যদ্বাণী’, জাপানজুড়ে আতঙ্ক
কমিক বইয়ে প্রকাশিত হয়েছে ‘ভয়ংকর পরিণতির ভবিষ্যদ্বাণী। এ ঘটনায় জাপানজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। একের পর এক পর্যটকরা দেশটিতে আসা ছেড়ে দিয়েছেন।   শনিবার (০৫ জুলাই) দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।  প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাপানে একটি পুরনো কমিক বইয়ের ‘দুর্যোগের ভবিষ্যদ্বাণী’কে ঘিরে দেশজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। বলা হচ্ছে, আজ ৫ জুলাই জাপানে এক বিধ্বংসী ভূমিকম্প ও সুনামি আঘাত হানবে। আর এই  আতঙ্কে পর্যটকরা দেশ ছাড়ছেন, এমনকি বিভিন্ন ফ্লাইটও বাতিল হয়েছে।  প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিতর্কের কেন্দ্রে রয়েছে ‘দ্য ফিউচার আই সো’ নামের একটি মাঙ্গা (জাপানি কমিক) বই। এটি ১৯৯৯ সালে প্রকাশিত হয়েছিল। বইটির লেখক রিও তাতসুকি দাবি করেছিলেন, স্বপ্নে তিনি দেখেছেন ২০২৫ সালের ৫ জুলাই ভয়াবহ একটি সুনামি ও ভূমিকম্প জাপান এবং প্রতিবেশী দেশগুলোকে কাঁপিয়ে দেবে। মাঙ্গায় বলা হয়েছে, সুনামিটি স্বাভাবিকের চেয়ে তিনগুণ শক্তিশালী হবে। অদ্ভুত ব্যাপার হলো, তাতসুকির আরেকটি স্বপ্নে দেখা ভবিষ্যদ্বাণী ২০১১ সালের মরণঘাতী ভূমিকম্প ও সুনামির সঙ্গেও মিলে গিয়েছিল। ফলে নতুন এই ভবিষ্যদ্বাণীকে ঘিরে আতঙ্ক বেড়েছে। জাপান ছাড়াও অনেক পর্যটক বিশ্বাস করতে শুরু করেছেন যে কিছু একটা ঘটতে চলেছে। তবে লেখক তাতসুকি নিজে এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, আমি কোনোভাবেই ভবিষ্যদ্রষ্টা নই। এটি নিছকই একটি কমিক বই।  বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, জাপানে জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত রেকর্ডসংখ্যক পর্যটক এসেছিলেন। কিন্তু মে মাস থেকে হঠাৎ পর্যটন হ্রাস পেয়েছে। হংকংভিত্তিক একটি ট্রাভেল এজেন্সির নির্বাহী স্টিভ হুয়েন বলেন, গুজবের ব্যাপক প্রভাব পড়েছে।  তিনি বলেন, ডিসকাউন্ট এবং ভূমিকম্প বীমার প্রবর্তন জাপানগামী ভ্রমণকে একেবারে শূন্যে নামতে বাধা দিয়েছে। এমনকি তার এজেন্সি জাপানের জন্য বুকিং-এ ৫০ শতাংশ ডিসকাউন্টের অফার দিয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিড়ম্বনার বিষয়, আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লেও ‘দ্য ফিউচার আই স’ মাঙ্গার বিক্রি এক মিলিয়ন কপি ছাড়িয়েছে এবং এটি এখন টোকিওর বইয়ের দোকানগুলোতে প্রধান প্রদর্শনীতে রয়েছে। টোকিওর একটি দোকানে বইটির পাশে একটি সতর্কতা সাইন রয়েছে, যাতে লেখা: আপনি এটি বিশ্বাস করবেন কি না, তা আপনার ওপর নির্ভর। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের বিজ্ঞানীরা এই পরিস্থিতি নিয়ে মতামত দিয়েছেন।তারা জানিয়েছেন, ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব নয়। টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকম্পবিদ প্রফেসর রবার্ট গেলার বলেন, তিনি ১৯৭০-এর দশক থেকে ভূমিকম্প নিয়ে গবেষণা করছেন এবং তার অভিজ্ঞতায় কোনো অতীন্দ্রিয় বা বৈজ্ঞানিক ভবিষ্যদ্বাণী কখনো নির্ভরযোগ্য হয়নি। তিনি বলেন, আমার বৈজ্ঞানিক জীবনে যত ভবিষ্যদ্বাণী দেখেছি, তার কোনোটিই সঠিক ছিল না।
কমিক বইয়ে ‘ভয়ংকর পরিণতির ভবিষ্যদ্বাণী’, জাপানজুড়ে আতঙ্ক
ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তানকে সাহায্য করেছে চীন ও তুরস্ক
ভারতের সীমান্তে সাম্প্রতিক সংঘাতে একসাথে একাধিক প্রতিপক্ষের মোকাবিলা করতে হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির উপ-সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল রাহুল আর সিং। তার ভাষায়, সামনে দৃশ্যমান শত্রু ছিল পাকিস্তান, কিন্তু বাস্তবে এই লড়াইয়ে পরোক্ষভাবে যুক্ত ছিল চীন ও তুরস্কও। ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (FICCI) একটি সামরিক প্রযুক্তি বিষয়ক সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, `সীমান্ত একটাই, কিন্তু শত্রু ছিল তিনটি। লড়াইয়ে পাকিস্তানকে পেছন থেকে চীন ও তুরস্ক সক্রিয়ভাবে সহায়তা করেছে।’  জেনারেল রাহুলের বক্তব্যে উঠে আসে, পাকিস্তান চীনের কাছ থেকে শুধু প্রচুর পরিমাণে সামরিক সরঞ্জামই পায়নি, বরং এই যুদ্ধে চীনা অস্ত্র ও প্রযুক্তির কার্যকারিতা যাচাইয়ের ‘পরীক্ষাগার’ হিসেবেও ব্যবহৃত হয়েছে। তার ভাষায়, ‘গত পাঁচ বছরের পরিসংখ্যান বলছে, পাকিস্তান যে সব অস্ত্র পেয়েছে, তার ৮১ শতাংশ এসেছে চীন থেকে। চীন এখানে সেই পুরনো প্রবাদ অনুসরণ করেছে— ধার করা ছুরি দিয়ে হত্যা করা।’  তিনি বলেন, চীন নিজের সীমান্তে সরাসরি জড়িয়ে পড়ার চেয়ে পাকিস্তানকে ব্যবহার করে ভারতের ওপর চাপ সৃষ্টির পথ বেছে নিয়েছে। লাদাখের উত্তরের সীমান্তে সরাসরি কাদা ছোড়াছুড়ির বদলে তারা পাকিস্তানকে ‘যন্ত্রণা দেওয়ার অস্ত্র’ হিসেবে ব্যবহার করছে। লেফটেন্যান্ট জেনারেল রাহুল জানান, পাকিস্তানকে কৌশলগতভাবে সহায়তা করেছে তুরস্কও। সংঘাতের সময় বিভিন্ন ধরনের ড্রোন এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ব্যক্তি পাকিস্তানিদের সঙ্গে ছিল বলে জানান তিনি। তার দাবি, তুরস্কের সরবরাহকৃত ড্রোন যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়েছে। পাশাপাশি, চীন নিয়মিতভাবে উপগ্রহ (স্যাটেলাইট) ব্যবহার করে পাকিস্তানকে সামরিক তথ্য সরবরাহ করেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। ‘অপারেশন সিঁদুর’ থেকে পাওয়া অভিজ্ঞতা ও শিক্ষার আলোকে ভবিষ্যতের যুদ্ধের প্রস্তুতি কেমন হওয়া উচিত তা নিয়েও বক্তব্য দেন জেনারেল রাহুল। এ সময় তিনি কিছু সমালোচনাও করেন খোলামেলাভাবে। তার মন্তব্য ঘিরে ভারতের রাজনীতিতে বিতর্কের ঢেউ উঠেছে। বিরোধী কংগ্রেস পার্টি চীনের প্রসঙ্গ তুলে কেন্দ্রীয় সরকারকে দায়ী করেছে। কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা জয়রাম রমেশ বলেন, পাকিস্তানকে সাহায্যের ক্ষেত্রে চীনের ভূমিকা নিয়ে এতদিন যেসব তথ্য কেবল সংবাদপত্রে এসেছে, তা এবার প্রকাশ্যে তুলে ধরেছেন উপ-সেনাপ্রধান। তিনি আরও বলেন, এই সেই চীন, যারা ২০২০ সালের ১৯ জুন লাদাখে ভারতের স্থিতাবস্থা সম্পূর্ণরূপে ভেঙে দিয়েছিল, অথচ সেই সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাদের কার্যত ক্লিনচিট দিয়েছিলেন।  উল্লেখ্য, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক দীর্ঘদিন ধরেই উত্তেজনাপূর্ণ। তবে এবার চীন ও তুরস্কের সরাসরি জড়িত থাকার দাবি ভারতীয় সামরিক মহলে নতুন মাত্রা যোগ করেছে, যার কূটনৈতিক প্রতিক্রিয়া আরও গভীর হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সূত্র : বিবিসি   
ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তানকে সাহায্য করেছে চীন ও তুরস্ক
২০৩০ সালের মধ্যে কাবুল হতে পারে বিশ্বের প্রথম পানিশূন্য শহর
এক সময় আফগানিস্তানের প্রাণকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত ছিল কাবুল। তবে আজ এক মহাবিপর্যয়ের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছে এ শহরটি। ছয় মিলিয়নেরও বেশি মানুষের এই শহরটি এখন মারাত্মক পানির সংকটে ভুগছে। এমনকি আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো সতর্ক করে বলছে- যদি বর্তমান অবস্থা অব্যাহত থাকে, তাহলে ২০৩০ সালের মধ্যেই কাবুল হতে পারে পৃথিবীর প্রথম বড় শহর যেখানে একফোঁটা পানিও থাকবে না। প্রায় ৩০ লাখ মানুষের স্থানচ্যুতি ঘটতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে। ২০২৫ সালের একটি প্রতিবেদনে বেসরকারি সংস্থা মার্সি কর্পস জানিয়েছে, কাবুলে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর ২৫ থেকে ৩০ মিটার পর্যন্ত নেমে গেছে গত দশকে। শহরে যত পানি উত্তোলন হচ্ছে, তার চেয়ে প্রাকৃতিকভাবে মাটির নিচে ফিরে যাচ্ছে অনেক কম পরিমাণ পানি। প্রতি বছর প্রায় ৪৪ মিলিয়ন কিউবিক মিটার কম পানি জমছে কাবুলে। এই হারে পানি উত্তোলন চলতে থাকলে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যেই পানির স্তর পুরোপুরি শুকিয়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে বলে জানাচ্ছে গবেষণা। ইউনিসেফ-এর হিসাব অনুযায়ী, শহরের অর্ধেকেরও বেশি কূপ ইতোমধ্যেই শুকিয়ে গেছে এবং বাকি পানির ৮০ শতাংশ দূষিত। এতে রয়েছে বিষাক্ত উপাদান যেমন- আর্সেনিক, লবণ এবং বর্জ্য।  পানি ছাড়া জীবন কল্পনাও করা যায় না। অথচ কাবুল শহরটি দ্রুত এক ভয়াবহ বাস্তবতার দিকে এগোচ্ছে- সম্পূর্ণ পানিশূন্যতার।  কেন এমন সংকট? বিশেষজ্ঞরা কাবুলের পানি সংকটের প্রধান তিনটি কারণ চিহ্নিত করেছেন : জলবায়ু পরিবর্তন : তুষারপাত কমে যাওয়া, তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়া ও পাহাড়ি নদীগুলোর পানি হ্রাস- সব মিলিয়ে পানির প্রাকৃতিক পুনরায় ভরাট প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হয়েছে। অব্যবস্থাপনা ও দুর্বল প্রশাসন : দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধ এবং তালেবান শাসনের পর উন্নয়ন কার্যক্রম স্থগিত হয়েছে। পানি ব্যবস্থাপনা নিয়ে কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। অতি জনসংখ্যা বৃদ্ধি : ২০০১ সালে কাবুলের জনসংখ্যা ছিল এক মিলিয়নেরও কম, এখন তা ছয় মিলিয়নের বেশি। যুদ্ধে বাস্তুচ্যুত বহু মানুষ শহরে আশ্রয় নেওয়ায় চাপে ভেঙে পড়েছে পানির অবকাঠামো। ধনী ও গরিবের পানির ব্যবধান কাবুলে ধনীরা নিজেদের জন্য গভীর কূপ খনন করে পানি সংগ্রহ করতে পারে। কিন্তু গরিব মানুষ, বিশেষ করে বস্তি এলাকায় বসবাসকারীরা এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত। প্রতিদিন সন্ধ্যায় ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা পানির ক্যান নিয়ে রাস্তায় ঘুরে বেড়ানো যেন তাদের জীবনচক্রের স্বাভাবিক অংশ। বাণিজ্যিক অপচয় ও কৃষিতে অতিরিক্ত ব্যবহার শহরে ৫০০-রও বেশি পানীয় কোম্পানি ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন করে, যাদের অনেকেই নিয়ন্ত্রণহীনভাবে এই জলসম্পদ ব্যবহার করছে। একাই অলোকজাই নামে একটি কোম্পানি প্রতিদিন ২৫ লাখ লিটার পানি তুলে নিচ্ছে। এছাড়াও, ৪০০ হেক্টর জমিতে সবজি উৎপাদনের জন্য নির্মিত গ্রিন হাউসগুলো বছরে প্রায় ৪০০ কোটি লিটার পানি ব্যবহার করে। অথচ এই পানি সঞ্চয় করে মানুষের প্রয়োজন মেটানোও সম্ভব ছিল। প্রকৃতি ও যুদ্ধ হিন্দুকুশ পাহাড় থেকে নেমে আসা কাবুল, পাঘমান ও লোগার নদীর পানিপ্রবাহ কমে গেছে। ২০২৩-২৪ সালের শীতেও শহরে স্বাভাবিকের তুলনায় মাত্র ৪৫-৬০ শতাংশ বৃষ্টি ও তুষারপাত হয়েছে। একইসঙ্গে, যুদ্ধ এবং আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার কারণে অর্থনীতি ভেঙে পড়েছে এখানে। ২০২১ সালে তালেবান ক্ষমতা নেওয়ার পর আন্তর্জাতিক অনুদান, প্রকল্প এবং প্রযুক্তিগত সহায়তা বন্ধ হয়ে গেছে। একটি সম্ভাব্য সমাধান ছিল- লোগার নদী থেকে কাবুলে পানি সরবরাহের প্রকল্প। এ নদীটি বছরে ৪৪০ কোটি লিটার পানি সরবরাহ করতে পারত। কিন্তু সেটিও আন্তর্জাতিক অনুদান বন্ধ হওয়ায় থেমে গেছে। এছাড়াও, ভারতের সঙ্গে শাহ-তুত বাঁধ প্রকল্পও এখন অনিশ্চয়তার মুখে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এখনই কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ না নিলে ভবিষ্যৎ অনিবার্য হয়ে যাবে। যেমন-  # ভূগর্ভস্থ পানিধারা পুনরায় পূরণ (Artificial Recharge) প্রকল্প চালু করা # পাহাড়ি নদী ও বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের জন্য বাঁধ, চেক ড্যাম ও রিজার্ভার নির্মাণ # পানির পাইপলাইন মেরামত ও আধুনিকীকরণ করে অপচয় বন্ধ করা # জলবায়ু সহনশীল পানি ব্যবস্থাপনা কৌশল গ্রহণ # আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ফিরিয়ে আনা  তবে এসব উদ্যোগ কার্যকর করতে হলে, আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা শিথিল করতে হবে এবং আফগানিস্তানকে পুনরায় বৈশ্বিক উন্নয়ন কাঠামোর অংশ হতে হবে। কাবুলের পানি সংকট শুধু পরিবেশগত নয়। এটি রাজনৈতিক, সামাজিক এবং বৈশ্বিক ব্যর্থতার প্রতিচ্ছবি। যদি এখনই সুপরিকল্পিত ও সমন্বিত উদ্যোগ না নেওয়া হয়, তাহলে কাবুল হতে পারে সেই প্রথম শহর, যেখানকার মানুষরা সকালে ঘুম থেকে উঠে বুঝবে তাদের শহরে আর একফোঁটাও পানি নেই।  সূত্র : আলজাজিরা
২০৩০ সালের মধ্যে কাবুল হতে পারে বিশ্বের প্রথম পানিশূন্য শহর
তোকারা দ্বীপপুঞ্জে আবারও ভূমিকম্প, বাড়ছে আশঙ্কা
তোকারা দ্বীপপুঞ্জে আবারও ভূমিকম্প, বাড়ছে আশঙ্কা
চিকিৎসাক্ষেত্রে চীনা বিজ্ঞানীদের যুগান্তকারী সফলতা
চিকিৎসাক্ষেত্রে চীনা বিজ্ঞানীদের যুগান্তকারী সফলতা
দালাই লামার উত্তরসূরি নির্বাচন ঘিরে মুখোমুখি চীন-ভারত
দালাই লামার উত্তরসূরি নির্বাচন ঘিরে মুখোমুখি চীন-ভারত
বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে আফগানিস্তান সরকারের পাশে রাশিয়া
বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে আফগানিস্তান সরকারের পাশে রাশিয়া