বৃহস্পতিবার, ২৮ আগস্ট ২০২৫, ১৩ ভাদ্র ১৪৩২

ভারতে রয়টার্সের এক্স অ্যাকাউন্ট বন্ধের পর নাটকীয়তা

কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ০৭ জুলাই ২০২৫, ০৭:০৪ এএম
আপডেট : ০৭ জুলাই ২০২৫, ০৭:৫৯ এএম
ছবি : সংগৃহীত
ছবি : সংগৃহীত

ভারতে রয়টার্স নিউজ অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেয় এক্স। এরপর সেটি উদ্ধারে শুরু হয় নাটকীয়তা। অবশেষে একদিন পর রোববার সেটি পুনরুদ্ধার করা হয়েছে। খবর রয়টার্সের।

একটি আইনি দাবির কারণে শনিবার অ্যাকাউন্ট স্থগিত করেছিল সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স। তবে সেটি স্পষ্ট করা হয়নি। রোববার রাতে বিস্তারিত কিছু উল্লেখ না করে এক্স রয়টার্সের সোশ্যাল মিডিয়া দলকে একটি ইমেইলে জানিয়েছে, ‘এই মুহূর্তে, আমরা ভারতে আপনার অ্যাকাউন্টের অ্যাক্সেস আর সীমাবদ্ধ করছি না।’

এক্স এবং ভারত সরকারের প্রতিনিধিরা অ্যাকাউন্ট পুনরুদ্ধারের বিষয়ে মন্তব্যের জন্য তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া দেয়নি।

এর আগে রোববারের শুরুতে ভারত সরকারের প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরোর একজন মুখপাত্র রয়টার্সকে জানান, কোনো ভারতীয় সরকারি সংস্থা রয়টার্স হ্যান্ডেল বন্ধ করার নির্দেশ দেয়নি। কর্মকর্তারা এই সমস্যা সমাধানের জন্য এক্সের সঙ্গে কাজ করছে বলেও জানান তিনি।

তখন রয়টার্সের একজন মুখপাত্র জানান, সংস্থাটি এক্সের সঙ্গে এই বিষয়টি সমাধান করতে এবং ভারতে রয়টার্স অ্যাকাউন্ট যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পুনরুদ্ধার করতে কাজ করছে।

রয়টার্স ওয়ার্ল্ড নিউজ এজেন্সির আরেকটি এক্স অ্যাকাউন্ট ভারতে ব্লক করা হয়েছিল। তাও রোববার গভীর রাতে পুনরুদ্ধার করা হয়েছে।

প্রধান রয়টার্স অ্যাকাউন্টে বিশ্বব্যাপী ২৫ মিলিয়নেরও বেশি ফলোয়ার রয়েছে। শনিবার রাত থেকে সেটিও ভারতে ব্লক করা হয়। একটি বিজ্ঞপ্তিতে এক্স ব্যবহারকারীদের জানানো হয়, ‘@Reuters ভারতে একটি আইনি দাবির প্রতিক্রিয়ায় বন্ধ করা হয়েছে।’

এদিকে ১৬ মে রয়টার্সের সোশ্যাল মিডিয়া দলকে পাঠানো একটি ইমেইল নিয়ে জল্পনা চলছে। সেই ইমেইলে এক্স জানিয়েছিল, "আমাদের নীতি হলো, কোনো অনুমোদিত সংস্থা (যেমন আইন প্রয়োগকারী সংস্থা বা সরকারি সংস্থা) থেকে কোনো অ্যাকাউন্ট থেকে কনটেন্ট সরানোর জন্য আইনি অনুরোধ পেলে অ্যাকাউন্টধারীকে জানানো। ভারতের স্থানীয় আইনের অধীনে এক্সের বাধ্যবাধকতা পালন করার জন্য, আমরা ভারতের তথ্য প্রযুক্তি আইন, ২০০০-এর অধীনে ভারতে আপনার এক্স অ্যাকাউন্ট বন্ধ করেছি; তবে অন্যত্র কনটেন্টটি উপলব্ধ রয়েছে।’

রয়টার্স নিশ্চিত করতে পারেনি যে ১৬ মে-র ইমেইলটি শনিবারের অ্যাকাউন্ট স্থগিতের সঙ্গে সম্পর্কিত কি না, বা কোন নির্দিষ্ট কনটেন্টের জন্য দাবিটি করা হয়েছিল। কেন এটি সরানোর অনুরোধ করা হয়েছিল, বা কোন সংস্থা অভিযোগটি দায়ের করেছিল।

যদিও ইমেইলটিতে কোন সংস্থা অনুরোধটি করেছে বা কোন কনটেন্ট সরানোর জন্য চাওয়া হয়েছে তা উল্লেখ করা হয়নি। তবে বলা হয়েছে, এই ধরনের ক্ষেত্রে একজন ব্যবহারকারী ভারতের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিবের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।

মন্তব্য করুন

টেক্সাসে ভয়াবহ বন্যার সর্বশেষ অবস্থা
যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্যে টেক্সাসে আকস্মিক বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮১তে। এ ছাড়া নিখোঁজ রয়েছেন অন্তত ৪১ জন। গত শুক্রবার (৪ জুলাই) টানা ভারি বর্ষণের পর স্যান অ্যান্টোনিও শহরের গুয়াদালুপ নদীর পানি হঠাৎ বেড়ে গেলে এই দুর্যোগের সৃষ্টি হয়। খবর বিবিসি।   বন্যায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কের কাউন্টির নদীতীরবর্তী গ্রীষ্মকালীন শিবির ‘ক্যাম্প মিস্টিক’। প্লাবিত এই ক্যাম্পেই প্রাণহানির ঘটনা সবচেয়ে বেশি। এ বন্যায় এখন পর্যন্ত মারা গেছেন অন্তত ৮১ জন, যাদের মধ্যে ২৮ জনই শিশু। নিখোঁজ রয়েছেন আরও ১০ জন কিশোরী ও একজন তত্ত্বাবধায়ক। স্থানীয় প্রশাসন আশঙ্কা করছে, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। শুক্রবার ভোরে মাত্র ৪৫ মিনিটের ব্যবধানে গুয়াদালুপ নদীর পানি এক লাফে ২৬ ফুট (প্রায় ৮ মিটার) বেড়ে যায়। তখন ক্যাম্প মিস্টিকে অবস্থান করছিল প্রায় ৭৫০ জন কিশোর-কিশোরী। যদিও অধিকাংশকে সময়মতো সরিয়ে নেওয়া সম্ভব হয়। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই ভেসে যায় ক্যাম্পের অনেকাংশ এলাকা। স্থানীয় প্রশাসন জানায়, কাদা ও ধ্বংসস্তূপের মধ্য দিয়ে উদ্ধারকাজ চালাতে গিয়ে মারাত্মক ঝুঁকির মুখে পড়ছেন উদ্ধারকর্মীরা। বিষধর সাপ ও বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে চলছে অভিযান। মৃতদের মধ্যে ১৮ জন প্রাপ্তবয়স্ক এবং ১০ শিশুর পরিচয় এখনো নিশ্চিত করা যায়নি। রোববার (৬ জুলাই) গভর্নর গ্রেগ অ্যাবট জানান, নিখোঁজ প্রত্যেককে খুঁজে বের করতে সব ধরনের চেষ্টা করা হবে। তিনি আরও সতর্ক করেন, আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আরও ঝড়বৃষ্টি হতে পারে, যা উদ্ধারকাজে বিঘ্ন ঘটাতে পারে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কের কাউন্টিকে ‘বড় ধরনের দুর্যোগ অঞ্চল’ হিসেবে ঘোষণা করেছেন। সেখানে ইতিমধ্যেই ফেডারেল জরুরি ব্যবস্থাপনা সংস্থা (FEMA) সক্রিয় হয়ে উঠেছে। প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে তিনি সম্ভবত আগামী শুক্রবার টেক্সাস সফর করবেন। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়াতে স্থানীয় বাসিন্দারাও এগিয়ে এসেছেন। কেউ আশ্রয় দিচ্ছেন, কেউ রান্না করে খাবার দিচ্ছেন, আবার কেউ ত্রাণ ও পোশাক সংগ্রহে যুক্ত হয়েছেন। বিপদের সময় একে অন্যের পাশে দাঁড়ানো এই মানবিকতা টেক্সাসবাসীর সংকটকালীন ঐক্যের প্রতিচ্ছবি। গাছপালা উপড়ে যাওয়া, গাড়ি উল্টে যাওয়া এবং বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া এলাকাজুড়ে হেলিকপ্টার, ড্রোন এবং বিশেষ যান ব্যবহার করে উদ্ধারকাজ চলছে। কর্মকর্তারা বলছেন, পরিস্থিতি এখনও বিপজ্জনক এবং সবাইকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। 
টেক্সাসে ভয়াবহ বন্যার সর্বশেষ অবস্থা
ভারতের নজরদারিতে ১১ কোটি ডলারের ব্রিটিশ যুদ্ধবিমান
কেরালার তিরুবনন্তপুরম বিমানবন্দর। তিন সপ্তাহ ধরে এখানে আটকে আছে ব্রিটেনের অত্যাধুনিক একটি যুদ্ধবিমান, এফ-৩৫বি। যুক্তরাষ্ট্রের লকহিড মার্টিন নির্মিত ১১ কোটি ডলারের এই স্টেলথ ফাইটারটি বর্তমানে রয়্যাল এয়ার ফোর্সের ছয় সদস্যের কড়া নজরদারির মধ্যে রয়েছে। যুদ্ধবিমানটি নিরাপত্তাজনিত ও কৌশলগত দিক থেকে এতটাই সংবেদনশীল যে, ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সমন্বয়ে ২৪ ঘণ্টার নজরদারির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। বিমানটি ১৪ জুন ভারত মহাসাগরের ওপর একটি নৌমহড়ায় অংশ নেওয়ার সময় খারাপ আবহাওয়ার কারণে কেরালার তিরুবনন্তপুরম বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করে। তখন এটি ব্রিটিশ রণতরী এইচএমএস প্রিন্স অব ওয়েলসে ফিরে যেতে পারেনি। অবতরণের পর যুদ্ধবিমানটিতে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। খবর বিবিসি। ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বিমানের নিরাপত্তা ও মেরামত নিয়ে তারা ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে। এরই মধ্যে এইচএমএস প্রিন্স অব ওয়েলস থেকে ইঞ্জিনিয়াররা এসে বিমানটি পরীক্ষা করেছেন; কিন্তু এখনো ত্রুটি সারানো সম্ভব হয়নি। বিমানটিকে আপাতত বিমানবন্দরের মেইনটেন্যান্স রিপেয়ার অ্যান্ড ওভারহল (এমআরও) হ্যাঙ্গারে সরানো হয়েছে। এদিকে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে কৌতূহলের সৃষ্টি হয়েছে আন্তর্জাতিক মহলে। কেউ প্রশ্ন তুলছেন, এত উচ্চ প্রযুক্তিসম্পন্ন একটি যুদ্ধবিমান কীভাবে দিনের পর দিন বিদেশের মাটিতে আটকে থাকতে পারে? মজার বিষয় হলো, সামাজিক মাধ্যমেও বিষয়টি নিয়ে চলছে নানা ট্রল ও মিম। কেউ বলছেন, ‘এখন এই বিমানের নাগরিকত্ব দেওয়া উচিত’, কেউ বা বলছেন, ‘এতদিন রানওয়েতে দাঁড়িয়ে থাকার ভাড়া হিসেবে ভারতের কোহিনূর দাবি করা উচিত।’ সতর্কতার অংশ হিসেবে কেরালা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, তারা ব্রিটিশ সরকারকে বিমান পার্কিং ফি প্রদানের বিষয়েও অবগত করেছে। পার্কিং ফি হিসেবে প্রতিদিন কয়েক হাজার ডলার ধার্য করা হতে পারে বলে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। মুম্বাইয়ের অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের নিরাপত্তা বিশ্লেষক ড. সামীর পাটিল বলেন, এই ঘটনা ব্রিটিশ নৌবাহিনীর ভাবমূর্তিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এত গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রযুক্তি কীভাবে এভাবে অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে থাকতে পারে, সেটি নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। ব্রিটিশ পার্লামেন্টেও এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বিরোধী দল সরকারের কাছে জানতে চেয়েছে, এই যুদ্ধবিমানের নিরাপত্তা ও প্রযুক্তিগত গোপনতা কীভাবে রক্ষা করা হচ্ছে। এফ-৩৫বি বিমানটি হলো এমন একটি ফিফথ জেনারেশন স্টেলথ জেট, যা অল্প জায়গা থেকে উড়তে এবং সোজাভাবে অবতরণ করতে সক্ষম। সাধারণত এটি রণতরী থেকে পরিচালিত হয়। ভারতের মাটিতে এতদিন আটকে থাকা এই যুদ্ধবিমান এখন কৌশলগত গুরুত্ব ছাড়াও সামাজিক আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। 
ভারতের নজরদারিতে ১১ কোটি ডলারের ব্রিটিশ যুদ্ধবিমান