বৃহস্পতিবার, ২৮ আগস্ট ২০২৫, ১৩ ভাদ্র ১৪৩২

সারজিসের বন্ধুর বাসা থেকে তিন বস্তা টাকা উদ্ধারের দাবিটি ভুয়া

কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ০৫ জুলাই ২০২৫, ০১:২৫ পিএম
আপডেট : ০৫ জুলাই ২০২৫, ০২:২৩ পিএম
টাকা উদ্ধার নিয়ে রিউমর স্ক্যানারের ফ্যাক্টচেক। ছবি : সংগৃহীত
টাকা উদ্ধার নিয়ে রিউমর স্ক্যানারের ফ্যাক্টচেক। ছবি : সংগৃহীত

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমের বন্ধুর বাসা থেকে তিন বস্তা টাকা পাওয়া গেছে। ঈদের পরে এনসিপির প্রচারণার খরচের জন্য সারজিসের কাছে রাখা হয়েছিল। এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

তবে ভিডিওটি এ ঘটনার নয় বলে জানিয়েছে তথ্য যাচাইকারী প্রতিষ্ঠান রিউমর স্ক্যানার। শনিবার (৫ জুলাই) প্রতিষ্ঠানটি তাদের ওয়েবসাইটে এ তথ্য জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ভিডিওটি মোহাম্মদপুর জেনেভা ক্যাম্পে মাদক বিক্রির টাকাসহ এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের। এ ছাড়া প্রচারিত পোস্টগুলোতে সারজিস আলমকে উপদেষ্টা বলে দাবি করা হলেও তিনি সরকারের উপদেষ্টা নন।

ভিডিও থেকে কিছু ছবি সংগ্রহ করে অনুসন্ধানে এ তথ্য জানা যায় বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। দুটি ভিডিওর তুলনামূলক বিশ্লেষণ শেষে জানা যায়, ২০২৫ সালের ৫ জুন ‘জেনেভা ক্যাম্পে অভিযান : মাদক বিক্রির আড়াই কোটি টাকাসহ গ্রেপ্তার ১০’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে ফুটেজ নিয়ে সারজিসের নামে এ ভুয়া তথ্য ছড়ানো হয়।

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ৪ জুন রাতে সেনাবাহিনী ও র‌্যাব-২ যৌথভাবে মোহাম্মদপুরের হুমায়ুন রোড এলাকায় অবস্থিত বিহারি ক্যাম্পে এই অভিযান চালিয়ে মাদক বিক্রির ২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা, মাদকদ্রব্য ও অস্ত্রসহ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন- মো. ইসহাক আহমেদ (৩৮), মো. চুম্মন (২৫), মো. রবিউল ইসলাম (৩০), মো. রায়হান (১৮), মো. শহিদুল ইসলাম বিজয় (১৮), মো. ইমরান সাইদ (৪২), মো. রাসেল (২২), মো. ইমরান (৩২), মো. শাহাদাত (২০) এবং মো. নয়ন (২৩)।

সুতরাং মোহাম্মদপুর জেনেভা ক্যাম্পে মাদক বিক্রির অভিযোগে টাকাসহ এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের দৃশ্যকে সারজিস আলমের বন্ধুর বাসা থেকে তিন বস্তা টাকা উদ্ধারের ঘটনা দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

মন্তব্য করুন

‘তোমার লাল টুকটুকে জুলাই বেচো না!’
জুলাই অভ্যুত্থানের সময় ফেসবুকে প্রোফাইল পিকচার লাল করার কর্মসূচি কে বা কারা ঘোষণা করেছে, সম্প্রতি তা নিয়ে উঠেছে ভিন্নমত। এবার এ বিষয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশের (আপ) প্রধান সমন্বয়কারী রাফে সালমান রিফাত। সোমবার (৭ জুলাই) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া পোস্টে তিনি লেখেন, ‘বন্ধু তোমার লাল টুকটুকে জুলাই বেচো না!’  প্রসঙ্গত, কোটা সংস্কার আন্দোলন কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যসহ নিহতদের স্মরণে গত বছরের ২৯ জুলাই সরকার রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করে। সে সময় এ সিদ্ধান্তকে প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলনকারীরা হত্যা ও নির্যাতনের শিকারদের প্রতি সহমর্মিতা ও সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হিসেবে চোখে-মুখে লাল কাপড় বেঁধে ছবি তোলার এবং ফেসবুকে প্রোফাইল পিকচার লাল করার কর্মসূচি ঘোষণা করেন।  তবে এ কর্মসূচি কে বা কারা ঘোষণা করেছে, তা নিয়ে উঠেছে ভিন্নমত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি এস এম ফরহাদ এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ও বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ ঢাবি শাখার আহ্বায়ক আব্দুল কাদের দুজনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা নিয়ে দুই ধরনের দাবি করছেন। এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি এস এম ফরহাদ সম্প্রতি খোলামেলা কথা বলেন। তিনি বলেন, রাষ্ট্র যখন গণহত্যার পরিবর্তে নাটকীয়ভাবে রাষ্ট্রীয় শোক ও কালো পতাকা উত্তোলনের ঘোষণা দেয়, তখন আবু সাদিক কায়েম আমার কাছে পরামর্শ চান। আমি তাকে বললাম, আমরা পাল্টা কর্মসূচি দেব। তারা যেহেতু কালো বেছে নিয়েছে, আমরা লাল বেছে নিই। ফরহাদ আরও বলেন, আইডিয়াটি শেয়ার করার পর সাদিক কায়েম বললেন, এটা কার্যকর হতে পারে। এটাই চূড়ান্ত করা হলো। আমরা একটি প্রেস রিলিজ তৈরি করে সমন্বয়কদের কাছে পাঠাই এবং তারা এটি ঘোষণা করেন। পরের দিন দেখলাম, সমাজের সব শ্রেণির মানুষ তাদের ফেসবুক প্রোফাইল লাল করে আপডেট করছেন। এমনকি ড. ইউনূস এবং খালেদা জিয়ার ফেসবুক পেজেও লাল প্রোফাইল শেয়ার করা হয়। তিনি ব্যাখ্যা করেন, রাষ্ট্র কালো পতাকার প্রতীক বেছে নিয়েছে, তাই আমরা লাল বেছে নিলাম। লাল রক্তের প্রতীক, যা দিয়ে আমরা হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ জানাতে পারি। এ জন্য আমরা মুখে ও চোখে লাল কাপড় বেঁধে প্রতিবাদ এবং ফেসবুক প্রোফাইল লাল করার কর্মসূচি ঘোষণা করি। ফরহাদ জানান, এই কর্মসূচির পেছনে বড় কারণ ছিল তখনকার পরিস্থিতি। আমরা তখন অনলাইন ও সফট কর্মসূচির ওপর নির্ভর করছিলাম। হার্ড কর্মসূচিতে যাওয়ার আগে দেখা গেল, প্রচুর গ্রেপ্তার ও মামলা হচ্ছে। তাই আমরা সফট কর্মসূচির দিকে মনোযোগ দিই। লাল প্রোফাইল কর্মসূচি যখন ব্যাপক সাড়া পেল, তখন আমরা অনুপ্রাণিত হলাম এবং পরে মাঠের কর্মসূচিতে যাই। প্রায় এক সপ্তাহের সফট কর্মসূচির শেষ ধাপ ছিল এই লাল প্রোফাইল কর্মসূচি। অন্যদিকে এ কর্মসূচির বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ও বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ ঢাবি শাখার আহ্বায়ক আব্দুল কাদের একটি ফেসবুক স্ট্যাটাস দেন। পোস্টে আব্দুল কাদের বলেন, জুলাইয়ে আন্দোলনের শেষের দিকের কর্মসূচিগুলা অনেকের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে ঠিক করা হতো। এক্ষেত্রে শিবিরের সাদেক কায়েম এবং ছাত্রদলের রাকিব-নাসির ভাইয়ের সঙ্গে আলোচনা করতাম। আগের দিন দুপুরের পর থেকে দফায় দফায় আলোচনা করে পরবর্তী দিনের কর্মসূচি ঠিক করা হতো। তারই ধারাবাহিকতায় ২৯ জুলাই তৎকালীন সরকারের পক্ষ থেকে পরবর্তী দিন রাষ্ট্রীয় শোক দিবস পালন এবং কালো ব্যাজ ধারণের ঘোষণা দেয়। তিনি বলেন, আমাদের কর্মসূচি ঠিক করতে গিয়ে শেষ বিকেলের দিকে নাসির ভাইয়ের সঙ্গে আমার কথা হয়, সরকারের ঘোষিত শোক দিবস এবং কালো ব্যাজ ধারণের বিপরীতে আমাদের লাল ব্যাজ ধারণের প্রস্তাবনা দেন তিনি। রাকিব-নাসির ভাইয়ের সঙ্গে এ বিষয়ে আমাদের একাধিকবার কথা হয়। পরে আমি সাদিক কায়েম ভাইকে ফোন দিয়ে বিষয়টি জানাই। তিনি বললেন, আলোচনা করে আমাকে জানাচ্ছেন। কিছুক্ষণ পরে তিনি ফোন দিয়ে সম্মতি দেন। ঢাবি শাখার আহ্বায়ক বলেন, প্রতিদিন কর্মসূচি ফাইনাল করার আগে আমরা চারজন—আমি, মাসউদ, রিফাত, মাহিন আলোচনা করতাম। শিবির ও ছাত্রদলের সঙ্গে অনেক সময় গ্রুপ কলে মিটিং করে কর্মসূচি ফাইনাল করতাম। তারই ধারাবাহিকতায় ওই দিনও আমরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করলাম। রিফাত বলল যে, ‘শোক দিবসের প্রতিবাদে আমরা কালো কাপড় চোখে মুখে বাঁধতে পারি।’ আমি রিফাতকে নাসির ভাইয়ের আইডিয়ার কথা বললাম, লীগ যেহেতু কালো কাপড় দিছে, আমরা এক্ষেত্রে লাল কাপড় বাঁধতে পারি। মাহিনও একই প্রস্তাব দিল। তিনি আরও বলেন, পরে গতানুগতিক ধারায় বারবার করে সাদিক ভাই এবং নাসির ভাইয়ের সঙ্গে আলোচনা করে চোখে-মুখে লাল কাপড় বাঁধার কর্মসূচি ফাইনাল করা হলো এবং ছবি তুলে প্রোফাইল পিকচার দেওয়ার আহ্বান জানানো হলো। যাদের কাছে লাল কাপড় নেই, তারা যেন প্রোফাইল ‘লাল’ করে, ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে সেই সময়ে রিফাত রশিদ দেশবাসীর প্রতি এমন আহ্বান জানিয়েছিলেন। প্রোফাইল পিকচারের সঙ্গে বিভিন্ন হ্যাশট্যাগ জুড়ে দেওয়ার বিষয়ে সাদিক ভাই পরামর্শ দেন, পরামর্শের আলোকে তিনি কিছু হ্যাশট্যাগও দিয়ে দেন।
‘তোমার লাল টুকটুকে জুলাই বেচো না!’
এবার লাল কাপড় বাঁধা ও প্রোফাইল লাল করার ভিন্ন গল্প জানালেন কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গত বছরের ২৯ জুলাই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ নিহতদের স্মরণে রাষ্ট্রীয় শোক পালনের সিদ্ধান্ত নেয় তৎকালীন সরকার। তবে এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে হত্যা ও নির্যাতনের শিকার আন্দোলনকারীদের প্রতি সহমর্মিতা ও সরকারের প্রতি প্রতিবাদস্বরূপ চোখে-মুখে লাল কাপড় বেঁধে ছবি তোলা ও ফেসবুকে নিজেদের প্রোফাইল লাল করার ঘোষণা দেন আন্দোলনকারীরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি এস এম ফরহাদ সামনে আনার পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ও বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ ঢাবি শাখার আহ্বায়ক আব্দুল কাদের এ নিয়ে ভিন্ন ঘটনা তুলে ধরেছেন। রোববার (৬ জুলাই) রাতে ফেসবুক নিজের অ্যাকাউন্টে এক পোস্টের মাধ্যমে তিনি এ বিষয়ে জানান। পাঠকদের জন্য তা হুবহু তুলে ধরা হলো— পোস্টে কাদের বলেন, জুলাইয়ে আন্দোলনের শেষের দিকের কর্মসূচিগুলা অনেকের সাথে আলাপ আলোচনা কর ঠিক করা হইতো। এক্ষেত্রে শিবিরের সাদেক কায়েম এবং ছাত্রদলের রাকিব-নাসির ভাইয়ের সাথে আলোচনা করতাম। আগের দিন দুপুরের পর থেকে দফায় দফায় আলোচনা করে পরবর্তী দিনের কর্মসূচি ঠিক করা হইতো। তারই ধারাবাহিকতায় ২৯ জুলাই তৎকালীন সরকারের পক্ষ থেকে পরবর্তী দিন রাষ্ট্রীয় শোক দিবস পালন এবং কালো ব্যাজ ধারণের ঘোষণা দেয়।’ ‘আমাদের কর্মসূচি ঠিক করতে গিয়ে শেষ বিকেলের দিকে নাসির ভাইয়ের সাথে আমার কথা হয়, সরকারের ঘোষিত শোক দিবস এবং কালো ব্যাজ ধারণের বিপরীতে আমাদের লাল ব্যাজ ধারণের প্রস্তাবনা দেন তিনি। রাকিব-নাসির ভাইয়ের সাথে এই বিষয়ে আমাদের একাধিকবার কথা হয়। পরে আমি সাদিক কায়েম ভাইকে ফোন দিয়ে বিষয়টা জানাই। তিনি বললেন, আলোচনা করে আমাকে জানাচ্ছেন। কিছুক্ষণ পরে তিনি ফোন দিয়ে সম্মতি দেন। প্রতিদিন কর্মসূচি ফাইনাল করার আগে আমরা চারজন- আমি, মাসউদ, রিফাত, মাহিন আলোচনা করতাম। শিবির এবং ছাত্রদলের সাথে অনেক সময় গ্রুপ কলে মিটিং করে কর্মসূচি ফাইনাল করতাম।’ ‘তারই ধারাবাহিকতায় ঐদিনও আমরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করলাম। রিফাত বললো যে, “শোক দিবসের প্রতিবাদে আমরা কালো কাপড় চোখে মুখে বাঁধতে পারি”। আমি রিফাতকে নাসির ভাইয়ের আইডিয়ার কথা বললাম, লীগ যেহেতু কালো কাপড় দিছে, আমরা এইক্ষেত্রে লাল কাপড় বাঁধতে পারি। মাহিনও একই প্রস্তাব দিল।’ আব্দুল কাদের আরও বলেন, ‘পরবর্তীতে গতানুগতিক ধারায় বারবার করে সাদিক ভাই এবং নাসির ভাইয়ের সাথে আলোচনা করে চোখেমুখে লাল কাপড় বাঁধার কর্মসূচি ফাইনাল করা হলো এবং ছবি তুলে প্রোফাইল পিকচার দেওয়ার আহবান জানানো হলো। যাদের কাছে লাল কাপড় নেই, তারা যেনো প্রোফাইল "লাল" করে, ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে সেই সময়ে রিফাত রশিদ দেশবাসীর প্রতি এমন আহবান জানিয়েছিলেন। প্রোফাইল পিকচারের সাথে বিভিন্ন হ্যাশট্যাগ জুড়ে দেওয়ার বিষয়ে সাদিক ভাই পরামর্শ দেন, পরামর্শের আলোকে তিনি কিছু হ্যাশট্যাগও দিয়ে দেন।’ এর আগে এই কর্মসূচির পেছনের পরিকল্পনা নিয়ে বলেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি এস এম ফরহাদ। তিনি বলেন, রাষ্ট্র যখন গণহত্যার পরিবর্তে নাটকীয়ভাবে রাষ্ট্রীয় শোক ও কালো পতাকা উত্তোলনের ঘোষণা দেয়, তখন আবু সাদিক কায়েম আমার কাছে পরামর্শ চান। আমি তাকে বললাম, আমরা পাল্টা কর্মসূচি দেব। তারা যেহেতু কালো বেছে নিয়েছে, আমরা লাল বেছে নিই। ফরহাদ আরও বলেন, আইডিয়াটি শেয়ার করার পর সাদিক কায়েম বললেন, এটা কার্যকর হতে পারে। এটাই চূড়ান্ত করা হলো। আমরা একটি প্রেস রিলিজ তৈরি করে সমন্বয়কদের কাছে পাঠাই, এবং তারা এটি ঘোষণা করেন। পরের দিন দেখলাম, সমাজের সব শ্রেণির মানুষ তাদের ফেসবুক প্রোফাইল লাল করে আপডেট করছেন। এমনকি ড. ইউনূস এবং খালেদা জিয়ার ফেসবুক পেজেও লাল প্রোফাইল শেয়ার করা হয়। তিনি ব্যাখ্যা করেন, রাষ্ট্র কালো পতাকার প্রতীক বেছে নিয়েছে, তাই আমরা লাল বেছে নিলাম। লাল রক্তের প্রতীক, যা দিয়ে আমরা হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ জানাতে পারি। এজন্য আমরা মুখে ও চোখে লাল কাপড় বেঁধে প্রতিবাদ এবং ফেসবুক প্রোফাইল লাল করার কর্মসূচি ঘোষণা করি। ফরহাদ জানান, এই কর্মসূচির পেছনে বড় কারণ ছিল তখনকার পরিস্থিতি। আমরা তখন অনলাইন ও সফট কর্মসূচির ওপর নির্ভর করছিলাম। হার্ড কর্মসূচিতে যাওয়ার আগে দেখা গেল, প্রচুর গ্রেপ্তার ও মামলা হচ্ছে। তাই আমরা সফট কর্মসূচির দিকে মনোযোগ দিই। লাল প্রোফাইল কর্মসূচি যখন ব্যাপক সাড়া পেল, তখন আমরা অনুপ্রাণিত হলাম এবং পরে মাঠের কর্মসূচিতে যাই। প্রায় এক সপ্তাহের সফট কর্মসূচির শেষ ধাপ ছিল এই লাল প্রোফাইল কর্মসূচি।
এবার লাল কাপড় বাঁধা ও প্রোফাইল লাল করার ভিন্ন গল্প জানালেন কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক
তাসনিম জারার হাফ প্যান্ট পরা ভাইরাল ছবিটি সম্পাদিত 
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারার এক ছবি ঘুরে বেড়াচ্ছে। ছবি দেখা যাচ্ছে, ডা. তাসনিম জারা হাফ প্যান্ট পরে আছেন।  ডা. তাসনিম জারার হাফ প্যান্ট পরা ছবিটি আসল নয়। প্রকৃতপক্ষে, এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির সহায়তার তৈরি করা হয়েছে। তথ্য যাচাইকারী প্রতিষ্ঠান রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে উঠে আসে এ তথ্য। সংস্থাটির অনুসন্ধানে জানা যায়, ডা. তাসনিম জারার হাফ প্যান্ট পরিহিত ভাইরাল ছবিটি আসল নয়। বরং, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি ব্যবহার করে তার ফুল প্যান্ট পরা একটি ছবি সম্পাদনা করে এই ছবি তৈরি করা হয়েছে।  ভাইরাল ছবিটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ‘Fariha Nishat’ নামের একটি ফেসবুক প্রোফাইলে থেকে ৩ জুলাই প্রকাশিত পোস্টটি সন্ধান পাওয়া যায়। এ বিষয়ে ফারিহা নিশাত জানান, তাসনিম জারার সঙ্গে তার তোলা একটি ছবি বিকৃত করে সামাজিক মাধ্যমে ভুয়া প্রচারণা চালানো হচ্ছে। পোস্টটিতে ভাইরাল ছবির পাশাপাশি মূল ছবিটিও যুক্ত করা হয়, যেখানে দুজনকে ফুল প্যান্ট পরিহিত অবস্থায় দেখা যায়। পরে ফারিহা নিশাতের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ঘুরে গত ৮ ডিসেম্বর প্রকাশিত মূল ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। ছবি দুটির বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ভাইরাল ছবির সঙ্গে মূল ছবির পটভূমি ও অন্যান্য উপাদানে উল্লেখযোগ্য মিল থাকলেও তাসনিম জারা ও ফারিহা নিশাতের পোশাকে অমিল দেখা যায়। এ ছাড়া ভাইরাল ছবিতে তাসনিম জারার হাতের আঙুলগুলো অসামঞ্জস্যপূর্ণ ও বিকৃতভাবে দেখা গেছে। বর্তমানে বিভিন্ন এআই টুল ব্যবহার করে ছবির পটভূমি অপরিবর্তিত রেখে সহজেই পোশাক বা নির্দিষ্ট উপাদান পরিবর্তন করা যায়। ভাইরাল ছবিটিও ঠিক এমন প্রযুক্তি ব্যবহার করে সম্পাদনা করা হয়েছে। সুতরাং, তাসনিম জারার হাফ প্যান্ট পরিহিত আলোচিত ছবিটি সম্পাদিত।
তাসনিম জারার হাফ প্যান্ট পরা ভাইরাল ছবিটি সম্পাদিত 
মালয়েশিয়ায় আটক বাংলাদেশিদের নিয়ে যে তথ্য দিলেন জুলকারনাইন
চরমপন্থি উগ্র মতবাদ এবং সন্ত্রাসবাদী আদর্শের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে আটক ৩৫ বাংলাদেশিকে নিয়ে নতুন তথ্য দিলেন অনুসন্ধানী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের। শনিবার (০৫ জুলাই) বিকেলে, নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে তথ্য দেন তিনি। পোস্টে তিনি আটকদের একটি তালিকাও প্রকাশ করেছেন। পোস্টে তিনি লেখেন, মালয়েশিয়া পুলিশ কর্তৃক ‘চরমপন্থি উগ্র মতবাদ’ এবং ‘সন্ত্রাসবাদী আদর্শ’-এর সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে ৩৬ জনকে আটক করার কথা গত ২৭ জুন একটি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে প্রকাশ করে দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন নাসুতিওন ইসমাইল।  বিস্তারিত অনুসন্ধানে জানা যায়, আটক ব্যক্তিদের মধ‍্যে ৩৫ বাংলাদেশি নাগরিক এবং একজন ইন্দোনেশিয়ার নাগরিক ছিলেন এবং এ বছরেরই এপ্রিল-মে-জুন তিন মাস ধরে পৃথক বিভিন্ন অভিযানে এদের আটক করা হয়। আনুষ্ঠানিকভাবে পুরো বিষয়টি প্রকাশ করা হয় গত ২৭ জুন।  তিনি লেখেন, মালয়েশিয়ার স্পেশাল ব্রাঞ্চের কাউন্টার টেররিজম ডিভিশন যেসব বাংলাদেশিকে আটক করেছে, তাদের অভিবাসন সংক্রান্ত কাগজপত্র যাচাই করে নিশ্চিত করা হয় যে, আটক ৩৫ জনের মধ্যে ১৪ জন (সংযুক্ত তালিকায় ৬-১৯ নং) বাংলাদেশি নাগরিক, মালয়েশিয়াতে অবৈধভাবে বসবাস করছিলেন।   তিনি আরও লেখেন, তাদের কাছে দেশটিতে থাকার কোনো বৈধ কাগজপত্র না পাওয়ার কারণে এই ১৪ জনকে ইমিগ্রেশন পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয় বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর জন্য এবং ইতোমধ্যে তালিকায় ৬ নম্বরে থাকা জাহেদ আহমেদ এবং ১০, ১১, ১৩, ১৫, ১৮ (ইমন মহিদউজ্জামান, আকরাম মো. ওয়াসিম, নজরুল ইসলাম, শেখ সালাম, মো. রেদওয়ানুল ইসলাম) কে বাংলাদেশে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং বাংলাদেশের নিরাপত্তা সংস্থা এদের সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে। তালিকায় ৬-১৯ নম্বর পর্যন্ত থাকা বাকি ৮ জনকে আগামী ৭ আগস্ট বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হবে বলে বিভিন্ন সূত্র দাবি করেছে।  সংযুক্ত তালিকার ১-৫ নম্বরে থাকা ব্যক্তিদের দেশটিতে প্রচলিত প্রিভেনশন অব টেররিজম অ্যাক্টের আওতায় আটক করে চার্জ গঠন করা হয়েছে এবং সিরিয়াল ২০-৩৫ নম্বরের বাংলাদেশি নাগরিকদের একই অ্যাক্টের আওতায় আটক দেখিয়ে বিশদ তদন্ত চলছে।  সায়ের লেখেন, এক সংবাদ সম্মেলনে মালয়েশিয়ার পুলিশ প্রধান বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে শ্রমিকদের মধ্যে ইসলামিক স্টেট (আইএস) জঙ্গিগোষ্ঠীর মতাদর্শ প্রচার এবং তহবিল সংগ্রহ করে, বাংলাদেশি শ্রমিকদের এমন একটি চক্র ভেঙে দিয়েছে মালয়েশীয় কর্তৃপক্ষ। এই চক্র আন্তর্জাতিক মানি ট্রান্সফার সার্ভিস ও ই-ওয়ালেট ব্যবহার করে সিরিয়া ও বাংলাদেশে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ‘আইএসের জন্য’ অর্থ পাঠাত। মালয়েশিয়া পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের কাউন্টার টেরোরিজম ডিভিশন তাদের অর্থ সংগ্রহের প্রমাণ পেয়েছে। তারা ঠিক কত অর্থ সংগ্রহ করেছে তা এখনো তদন্তাধীন। আমাদের ধারণা, সদস্য ফি এবং চাঁদা থেকেই এ অর্থ এসেছে বলে তিনি জানান। পুলিশের বরাত দিয়ে মালয়েশিয়া স্টার পত্রিকা লিখেছে, ‘গেরাকান মিলিটান রেডিক‍্যাল বাংলাদেশ’ বা ‘জিএমআরবি’ নামে পরিচিত এই চক্র হোয়াটসঅ্যাপ ও টেলিগ্রামের মতো অ্যাপে সদস্য সংগ্রহ এবং উগ্র মতবাদের প্রচার করে আসছিল।
মালয়েশিয়ায় আটক বাংলাদেশিদের নিয়ে যে তথ্য দিলেন জুলকারনাইন
জুলাইয়ে শহীদ হতে না পারা আমার জন্য আফসোসের : আসিফ মাহমুদ
জুলাইয়ে শহীদ হতে না পারা আমার জন্য আফসোসের : আসিফ মাহমুদ