বৃহস্পতিবার, ২৮ আগস্ট ২০২৫, ১৩ ভাদ্র ১৪৩২

পুলিশ প্রশাসন সংস্কারে সব ছাত্র-সংগঠনের আন্দোলন এক ব্যানারে

চট্টগ্রাম ব্যুরো
প্রকাশ : ০৩ জুলাই ২০২৫, ০৮:১৪ পিএম
পুলিশ সংস্কারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করে এনসিপি, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনসহ বেশ কয়েকটি সংগঠন। ছবি : সংগৃহীত
পুলিশ সংস্কারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করে এনসিপি, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনসহ বেশ কয়েকটি সংগঠন। ছবি : সংগৃহীত

চট্টগ্রামের পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) স্থায়ীভাবে বহিষ্কার ও বিচারের আওতায় নিয়ে আসা ও নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়া, চট্টগ্রামের পুলিশ সুপারকে (এসপি) অপসারণ করা, পুলিশ সংস্কারবিষয়ক নির্দেশনা দেওয়া এবং যে কোনো থানায় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগকে নিয়ে গেলে তাদের কন্ডিশন ছাড়া গ্রেপ্তারের চার দফা দাবি তুলেছিল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা।

এসব দাবিতে বুধবার (২ জুলাই) চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়ক ও চট্টগ্রামের খুলশী সড়কে অবরোধ কর্মসূচি ও বিক্ষোভ সমাবেশ পালন করেন তারা।

কিন্তু পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জায়েদ মো. নাজমুন নূরকে বহিষ্কার না করে চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ে সংযুক্ত করায় ক্ষুব্ধ তারা। এমন বাস্তবতায় এই চার দফা দাবিকে সামনে রেখে ‘পুলিশ-প্রশাসন সংস্কার আন্দোলন’ নামের একটি আলাদা প্লাটফর্ম নিয়ে এগুনোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা যেখানে সব ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা একত্রিত হয়ে চূড়ান্তভাবে পুলিশ-প্রশাসন সংস্কার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। তাদের সঙ্গে এখন পর্যন্ত প্রায় ১১টি ছাত্র সংগঠন সমর্থন দিয়েছে।

পুলিশের চট্টগ্রাম বিভাগীয় রেঞ্জ ডিআইজি অফিসের দায়িত্বশীলরা বলছেন, পুলিশ-প্রশাসন সংস্কার তারাও চান। এই কর্মসূচির ব্যাপারে ডিআইজি অফিসের ভিন্ন মত নেই। তবে ওসি কিংবা এসপির বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নেওয়ার যেই বিষয়টি সামনে আসছে তার ক্ষমতা তাদের (ডিআইজি অফিস) নেই। এটি মন্ত্রণালয়ের বিষয়। ফলে সরকার কিংবা মন্ত্রণালয়ই বিষয়টি আন্তরিকভাবে দেখলে তা দ্রুত সমাধান সম্ভব।

বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) বিকেলে নগরের ষোলশহর রেলওয়ে স্টেশনে পুলিশ সংস্কার আন্দোলনের ব্যানারে সংবাদ সম্মেলন করে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

এসময় এনসিপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্য সচিব আরিফ সোহেল, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) চট্টগ্রামের তত্ত্বাবধায়ক জোবাইরুল হাসান আরিফও উপস্থিত ছিলেন। পুলিশ-প্রশাসন সংস্কারে সব ছাত্র সংগঠনের এক ব্যানারে ‘পুলিশ-প্রশাসন সংস্কার আন্দোলন’ নামের এই প্লাটফর্মটির ঘোষণা দেন গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি। আন্দোলনের অংশ হিসেবে আজ সন্ধ্যা ৬টায় নগরের ২ নম্বর গেটের বিপ্লব উদ্যানে ‘আত্মপ্রকাশ মিছিল’ অনুষ্ঠিত হয়। আয়োজকেরা মিছিলটিকে ‘সংস্কার সংগ্রামের প্রথম রাজপথিক সওয়ার’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

এনসিপি জাতীয় যুবশক্তির কেন্দ্রীয় সংগঠক আশরাফুল হক টিপু কালবেলাকে বলেন, এই প্ল্যাটফর্মে যুক্ত হয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, হেফাজতে ইসলাম, এনসিপি, যুবশক্তি, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ, ছাত্র অধিকার পরিষদ, দাওয়াহ অ্যাসোসিয়েশন, ইসলামিক দাওয়াহ মুভমেন্ট, এসএডি, পুনাব, পুসাব, জুলাই ঐক্যসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও অরাজনৈতিক ছাত্র-যুব সংগঠন। জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল এবং ইসলামী ছাত্রশিবিরকেও এই প্লাটফর্মে আনার ব্যাপারে আলোচনা চলছে।

তিনি বলেন, এই প্ল্যাটফর্ম চার দফা মূল দাবির ভিত্তিতে কাজ করবে। পুলিশ ও প্রশাসনে সীমাহীন দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার ও দলীয় প্রভাব চলে আসছে, যা জাতীয় নিরাপত্তা এবং জনগণের মৌলিক অধিকারের পরিপন্থি। এখন সময় এসেছে বাস্তব সংস্কারের। যদি অন্তর্বর্তী সরকার এই সংস্কারে ব্যর্থ হয়, তবে রাজপথ থেকেই আমরা চূড়ান্ত বাস্তব সংস্কারের সংগ্রাম চালিয়ে যাব।

‘পুলিশ-প্রশাসন সংস্কার আন্দোলন’ এর ঘোষক ও গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি কালবেলাকে বলেন, আমাদের দাবি ছিল পটিয়ার ওসিকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা। কিন্তু তারা সেটা না করে তাকে প্রত্যাহার করেছে। এই সিদ্ধান্ত আমরা মেনে নিতে পারি না। আমরা চাই তাকে দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে হবে। এছাড়া আরও তিন দফা দাবিতে এই প্লাটফর্ম কাজ করবে। এই আন্দোলনের মূল বিষয় হলো, পুলিশ-প্রশাসনকে আমূল সংস্কারে নিয়ে আসা।

তিনি আরও বলেন, আমরা ৫ আগস্টের পর থেকেই দেখছি-আমাদের সহযোদ্ধারা যখনই ছাত্রলীগ ধরিয়ে দিতে যান তখনই তাদের মব বলে আখ্যায়িত করে আওয়ামী লীগের এজেন্ডাও বাস্তবায়ন করা হয়। এই বিষয়গুলো থেকে তাদের বেরিয়ে আসতে হবে।

এনসিপির জাতীয় যুবশক্তির যুগ্ম সদস্য সচিব নীলা আফরোজ কালবেলাকে বলেন, ৫ আগস্টের পর থেকে পুলিশ-প্রশাসন একেবারেই ভেঙে পড়েছিল। তারা আমাদের ওপর এত অত্যাচার-নিপীড়ন চালানোর পরও আমরা তাদের সহযোগিতা করতে মাঠে নেমেছিলাম। আমরা মনে করেছিলাম তারা যেহেতু আওয়ামী লীগ সরকারের চাপে পড়েই অনেক কিছু করেছে তাই তাদের সহযোগিতা করা উচিত। কিন্তু তারা যেহেতু বুঝতে পেরেছে, এত কিছুর পরও তাদের কোন শাস্তি হচ্ছে না- শুধু প্রত্যাহারে সীমাবদ্ধ। তাই পুলিশ-প্রশাসন আরও বেশি উগ্র আচরণ শুরু করেছে। আমরা কিছু বললেই তারা মব হিসেবে আমাদের উপস্থাপন করছেন এবং উল্টো আমাদের ওপর হামলা চালাচ্ছেন। ফলে তাদের সংস্কার জরুরি হয়ে পড়েছে।

এনসিপির যুগ্ম মুখ্য সংগঠক জোবেইরুল হাসান আরিফ বলেন, আমাদের এ দাবিগুলো খুব আংশিক পর্যন্তই তারা সর্বোচ্চভাবে আমাদেরকে বুঝিয়ে দিতে পেরেছেন। আংশিকভাবে যা বুঝিয়ে দিয়েছেন, তাও ন্যূনতম না। আমরা দেখেছি তারা প্রহসনের মতো করে এক ধরনের প্রোমোশনের ব্যবস্থা করেছে ওসিকে। আমরা দেখেছি, বর্তমান প্রশাসন সহযোগিতা করছে ছাত্রলীগকে কীভাবে নেতৃত্ব দেওয়া যায়। বর্তমান প্রশাসন ছাত্রলীগের স্টেকহোল্ডার হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। আমরা দেখেছি, বর্তমান প্রশাসন ছাত্রলীগের গডফাদার হিসেবে কাজ করছে বাংলাদেশে।

বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিয়ে তিনি বলেন, আমরা যখন পটিয়া থানায় ছাত্রলীগকে ধরিয়ে দিতে যাই, পটিয়া থানা আমাদের মব বলে আমাদের ওপর টর্চার চালায়, আমাদের অনেক ভাইদের আহত করে। আমাদের অনেক ভাইয়েরা এখনও পর্যন্ত থানায় অবস্থান করছে, মামলা নেওয়া হচ্ছে না। হসপিটালে কাতরাচ্ছে। এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে আমরা পুলিশ সংস্কার আন্দোলনের পক্ষ থেকে একটি কর্মসূচি ঘোষণা করছি।

চট্টগ্রাম বিভাগীয় রেঞ্জ পুলিশের অ্যাডিশনাল ডিআইজি (অ্যাডমিন এন্ড ফিন্যান্স) মোহাম্মদ জাবেদুর রহমান কালবেলাকে বলেন, পুলিশ-প্রশাসন সংস্কার আমরাও চাই। চট্টগ্রামের ডিআইজি স্যার জয়েন করার পর থেকেই এই বিষয় নিয়ে সোচ্চার। তবে তারও কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। ছাত্রদের এই কর্মসূচির ব্যাপারে আমাদের ভিন্ন মত নেই। তবে ওসি কিংবা এসপির বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা আমাদের (ডিআইজি অফিস) নেই। এটি মন্ত্রণালয়ের বিষয়। ফলে সরকার কিংবা মন্ত্রণালয়ই বিষয়টি আন্তরিকভাবে দেখলে তা দ্রুত সমাধান সম্ভব।

তিনি আরও বলেন, সরকারি নিয়মানু ও আইন অনুযায়ী হুট করেই কারো বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যায় না। পটিয়ার ওসির বিষয়ে আমরা তদন্ত করছি। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু এর আগে আমরা সব অভিযোগের বিষয় তদন্ত করছি।

এদিকে বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টায় নগরের ২ নম্বর গেটের বিপ্লব উদ্যানে ‘আত্মপ্রকাশ মিছিল’ অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলটি দুই নম্বর গেট থেকে শুরু হয়ে সানমার হয়ে ষোলশহর রেলস্টেশনে গিয়ে মিলিত হয়।

এতে এর আগে, মঙ্গলবার (১ জুলাই) রাত সাড়ে ৯টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে চার পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ২০ জন আহত হন।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রাত ৯টার দিকে পটিয়ার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে থেকে রাঙামাটি জেলা ছাত্রলীগ নেতা দীপংকর তালুকদারকে আটক করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা। পরে তাকে পটিয়া থানা চত্বরে নিয়ে আসা হয়। তবে ওই ছাত্রলীগ নেতার নামে মামলা না থাকায় পুলিশ গ্রেপ্তার করতে চায়নি। এ নিয়ে নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের উত্তেজনা দেখা দেয় এবং পরে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে পুলিশ ওই ছাত্রলীগ নেতাকে নিজেদের হেফাজতে নেয় এবং নেতাকর্মীদের লাঠিপেটা করে।

এদের মধ্যে আহত অনেকের অবস্থা গুরুতর। পরে বুধবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির (এনসিপি) আন্দোলনের মুখে চট্টগ্রামের পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জায়েদ মো. নাজমুন নূরকে বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে প্রত্যাহার করা হয়। তাকে চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে।

মন্তব্য করুন

সাইফ পাওয়ার টেকের অধ্যায় শেষ, চট্টগ্রাম বন্দরের দায়িত্বে নৌবাহিনী
দীর্ঘ ১৭ বছর পর চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) থেকে বিদায় নিচ্ছে বর্তমানে সবচেয়ে আলোচিত প্রতিষ্ঠান সাইফ পাওয়ার টেক। এবার চট্টগ্রাম বন্দরের দায়িত্ব নেবে নৌবাহিনী। চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায় আগামীকাল সোমবার (৭ জুলাই) থেকে টার্মিনাল পরিচালনা করবে নৌবাহিনীর অধীন প্রতিষ্ঠান চিটাগং ড্রাইডক লিমিটেড। এজন্য প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে এনসিটি পরিচালনার চুক্তি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ।  আগামীকালই এই চুক্তি হবে বলে কালবেলাকে নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক। তিনি বলেছেন, সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ড্রাইডকের সঙ্গে ছয় মাসের জন্য এনসিটি পরিচালনার চুক্তির সিদ্ধান্ত বন্দর কর্তৃপক্ষের বোর্ড সভায় অনুমোদিত হয়েছে। সোমবার চুক্তির পর সাইফ পাওয়ার টেক আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব হস্তান্তর করবে। কাল থেকে এনসিটি পরিচালনা করবে চিটাগাং ড্রাইডক। চিটাগং ড্রাইডক লিমিটেড রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন এবং বাংলাদেশ নৌবাহিনী পরিচালিত সামরিক জাহাজ মেরামতকারী প্রতিষ্ঠান। চট্টগ্রাম বন্দরের সীমানার মধ্যেই এটির অবস্থান। এনসিটির পরিচালনা ছাড়লেও সাইফ পাওয়ারটেক চুক্তি অনুযায়ী বন্দরের অন্যতম টার্মিনাল চিটাগং কনটেইনার টার্মিনাল (সিসিটি) পরিচালনা করতে থাকবে। চট্টগ্রাম বন্দরের ৪টি কনটেইনার টার্মিনালের বাকি দুটি হলো— জেনারেল কার্গো বার্থ (কনটেইনার ও বাল্ক-জিসিবি) এবং পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল (পিসিটি)।
সাইফ পাওয়ার টেকের অধ্যায় শেষ, চট্টগ্রাম বন্দরের দায়িত্বে নৌবাহিনী
চসিক মেয়রের সঙ্গে কানাডার ফেডারেল এমপির বৈঠক
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন কানাডার টরন্টো সফরে দেশটির ফেডারেল সংসদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী নাথানিয়েল এরস্কাইন-স্মিথের সঙ্গে এক বৈঠক করেছেন। এ সময় তারা দুই শহর এবং দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক, সামাজিক ও পরিবেশগত নানা খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে আলোচনা করেন। শনিবার (৫ জুলাই) কানাডার টরন্টোতে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। নাথানিয়েল এরস্কাইন-স্মিথ ২০১৫ সাল থেকে টরন্টোর বিচেস- ইস্ট ইয়র্ক এলাকার সংসদ সদস্য। তিনি কানাডার হাউজিং, অবকাঠামো ও কমিউনিটি উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের সাবেক মন্ত্রী। একই সঙ্গে তিনি কানাডা-বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফ্রেন্ডশিপ গ্রুপের চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। বৈঠকে চট্টগ্রাম ও কানাডার বন্দরগুলোর মধ্যে সরাসরি বাণিজ্যিক রুট স্থাপন, শুল্ক ও কাস্টমস প্রক্রিয়া সহজীকরণ, দক্ষ জনশক্তি রপ্তানি ও শিক্ষার্থী বিনিময়সহ অভিবাসন খাতে নতুন সম্ভাবনার কথা আলোচনা হয়। পরিবেশ রক্ষায় সবুজ অবকাঠামো, বন্যা ব্যবস্থাপনা ও জলবায়ু অভিযোজন নিয়ে যৌথ কাজের ক্ষেত্র তৈরি করার বিষয়েও আগ্রহ প্রকাশ করেন দুই নেতা। রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় কানাডার সহায়তা অব্যাহত রাখা এবং স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও দুর্যোগ মোকাবিলায় যৌথ উদ্যোগ নেওয়া নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়। সমুদ্রবন্দর, লজিস্টিকস, সবুজ প্রযুক্তি ও জনস্বাস্থ্য খাতে গবেষণা ও প্রযুক্তি স্থানান্তরের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। বৈঠক শেষে মেয়র ড. শাহাদাত হোসেন বলেন, নাথানিয়েল এরস্কাইন-স্মিথের মতো একজন অভিজ্ঞ ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত নেতার সঙ্গে আলোচনা অত্যন্ত ফলপ্রসূ হয়েছে। এই সংলাপ দুই দেশের সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করবে। নাথানিয়েল এরস্কাইন-স্মিথ বলেন, বাংলাদেশ ও কানাডার মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা আরও গভীর করতে তিনি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। দুই শহরের মধ্যে এই ধরনের সংলাপ দীর্ঘমেয়াদে বাস্তব সুফল বয়ে আনবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
চসিক মেয়রের সঙ্গে কানাডার ফেডারেল এমপির বৈঠক
বৈষম্যবিরোধী নেতার বিরুদ্ধে ‘চাঁদাবাজির’ অভিযোগ
দুই কোটি টাকার চাঁদা না পেয়ে জাতীয় শ্রমিক লীগের মেঘনা পেট্রোলিয়াম এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদককে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ উঠেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চট্টগ্রাম নগরের সদস্যসচিব নিজাম উদ্দিনের বিরুদ্ধে। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি জানান, এটি একটি ষড়যন্ত্র। শনিবার (৫ জুলাই) চট্টগ্রাম নগর পুলিশ কমিশনার হাসিব আজিজ বরাবর অভিযোগ করে একটি চিঠি দিয়েছেন রিয়াজুল জান্নাত নামের এক নারী।  রিয়াজুল জান্নাত জামায়াতে ইসলামীর বাগমনিরাম দক্ষিণ সাংগঠনিক ওয়ার্ডের সেক্রেটারি নওশেদ জামালের স্ত্রী।  এর আগে গত বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) নওশেদ জামালকে গ্রেপ্তার করেছে কোতোয়ালি থানা। পুলিশ বলছে, নওশেদ জাতীয় শ্রমিক লীগ মেঘনা পেট্রোলিয়াম এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। চিঠিতে রিয়াজুল জান্নাত উল্লেখ করেন, নওশেদ জামাল চট্টগ্রামে মেঘনা পেট্রোলিয়াম এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ও জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তিনি জামায়াতে ইসলামীর রুকন, পাশাপাশি বাগমনিরাম দক্ষিণ সাংগঠনিক ওয়ার্ডের সেক্রেটারি। কিছুদিন ধরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা পরিচয় দিয়ে নেজাম (নিজাম) উদ্দিন নামের এক ব্যক্তি তার স্বামীর কাছ থেকে দুই কোটি টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিলেন। চাঁদা না দেওয়ায় তার স্বামীকে ফাঁসানো হয়। রিয়াজুল জান্নাত চিঠিতে একটি ভিডিওর কথা উল্লেখ করেন। ৬ মিনিট ৫০ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে নিজাম উদ্দিনকে একটি কক্ষে বসে মোবাইল ফোনে কথা বলতে দেখা যায়। সেখানে একপর্যায়ে তিনি বলেন, ‘আরে ভাই শোনেন, পুলিশ পারে না এমন কিছু নাই...। আমি বলতে চাচ্ছি, আপনার যার প্রতি ক্ষোভ, যাদের প্রতি ক্ষোভ, ওই তিনজনকে হলেই তো হইছে... আপনি যদি চান ওই তিনজনকে... করে দিতে পারবে... দেশে থাকতে হবে, এটা মাথায় রাইখেন।’ এদিকে ফেসবুকে পোস্ট করে নিজাম উদ্দিন দাবি করেছেন তিনি চাঁদা চাননি। এ ছাড়া ওই নারীর উল্লিখিত ভিডিওটি পুরোনো। পোস্টে তিনি উল্লেখ করেন, ‘ভিডিওটি পতেঙ্গা থানা এলাকার, তা-ও চার থেকে পাঁচ মাস আগের। অথচ ওই ব্যক্তি গ্রেপ্তার হয়েছেন মাত্র দুই দিন আগে কোতোয়ালি থানার একটি মামলায়। ভিডিওতে কোথাও ‘টাকা দাবির’ তথ্য না থাকার পরও এটিকে ‘চাঁদাবাজির’ তকমার ঢাল হিসেবেই ব্যবহার করছে একটি চক্র।’ নিজাম উদ্দিন কালবেলাকে জানান, এটি একটি ষড়যন্ত্র। আমি ওসিকে বলেছি, আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট হলে নওশেদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে, আর না হয় ছেড়ে দিতে। কিন্তু তারা এখন দাবি করছেন, আমি তাকে ধরিয়ে দিয়েছি। চট্টগ্রাম নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) মাহমুদা বেগম কালবেলাকে জানান, এ ধরনের অভিযোগ সাধারণত সংশ্লিষ্ট থানায় কিংবা উপকমিশনার কার্যালয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হয় অথবা পুলিশ কমিশনার এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি করে ব্যবস্থা নেবেন।
বৈষম্যবিরোধী নেতার বিরুদ্ধে ‘চাঁদাবাজির’ অভিযোগ
মদিনা থেকে ফিরেই চট্টগ্রামে রানওয়েতে আটকে গেল বিমান
চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সৌদি আরবের মদিনা থেকে আসা হজযাত্রীদের একটি ফ্লাইট রানওয়েতে আটকা পড়েছে। এতে দুই ঘণ্টা রানওয়ে বন্ধ ছিল। ওই ফ্লাইটে ৩৭৮ জন হজযাত্রী ছিলেন। শনিবার (৫ জুলাই) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইটটি (বিজি-১৩৮) অবতরণের পর এ ঘটনা ঘটে।  শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইব্রাহীম খলিল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, মদিনা থেকে হজ্জযাত্রী নিয়ে চট্টগ্রামে আসা বিমান বাংলাদেমের ফ্লাইট ল্যান্ড করার পর রানওয়ে-২৩ প্রান্তে এসে যান্ত্রিক ত্রুটিজনিত কারণে আটকা পড়ে। ত্রুটি সারিয়ে বিমানটিকে বেলা ১১টা ২০ মিনিটে রানওয়ে থেকে নিরাপদে সরিয়ে এপ্রোনে নিয়ে আসা হয়েছে। অনাকাঙ্ক্ষিত এই ইস্যুতে চট্টগ্রাম বিমানবন্দরের রানওয়ে প্রায় ২ ঘণ্টা বন্ধ ছিল। ফ্লাইটে ৩৭৮ জন হজযাত্রী ছিলেন। এদিকে ক্ষুদে বার্তায় চট্টগ্রাম বিমানবন্দরের সহকারী সিকিউরিটি সুপারভাইজার আবদুল আলম জানান, বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইটটি হজ্জযাত্রী নিয়ে মদিনা থেকে চট্টগ্রামে অবতরণ করার পরে রানওয়ের শেষ মাথা আটকে যায়। এরপর বিমানের সামনের চাকা টেনে ঠিক করে দিলে পরবর্তী সময়ে বিমান ইঞ্জিন স্টার্ট করে বে-তে চলে আসে। বর্তমানে চট্টগ্রাম বিমান বন্দরে উড্ডয়ন ও অবতরণ কার্যক্রম চালু রয়েছে।  
মদিনা থেকে ফিরেই চট্টগ্রামে রানওয়েতে আটকে গেল বিমান
চট্টগ্রামে ৩ হাজার লিটার অকটেনসহ একজন আটক
চট্টগ্রামে ৩ হাজার লিটার অকটেনসহ একজন আটক
চট্টগ্রামে চালু হলো থাইল্যান্ডের মেডপার্ক হাসপাতালের অফিস
চট্টগ্রামে চালু হলো থাইল্যান্ডের মেডপার্ক হাসপাতালের অফিস
জুলাইয়ে আহত সাংবাদিকদের খোঁজ নেয়নি কেউই!
জুলাইয়ে আহত সাংবাদিকদের খোঁজ নেয়নি কেউই!
জামায়াতে যোগ দিলেন জাপা নেতা
জামায়াতে যোগ দিলেন জাপা নেতা