বৃহস্পতিবার, ২৮ আগস্ট ২০২৫, ১৩ ভাদ্র ১৪৩২

জুলাইয়ে আহত সাংবাদিকদের খোঁজ নেয়নি কেউই!

ফরহাদ সুমন, চট্টগ্রাম
প্রকাশ : ০৪ জুলাই ২০২৫, ১০:০৬ পিএম
আহত সংবাদকর্মীরা। ছবি : সংগৃহীত
আহত সংবাদকর্মীরা। ছবি : সংগৃহীত

জুলাই বিপ্লবের এক বছর পার হলেও চট্টগ্রামে জুলাই আন্দোলনে ত্রিমুখী হামলায় আহত সাংবাদিকদের খোঁজ না নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এমনকি অন্তর্বর্তী সরকারের জুলাই-আগস্টে আহত যোদ্ধাদের নামের তালিকাতে তাদের ঠাঁই হয়নি বলেও গুঞ্জন রয়েছে। জোটেনি চিকিৎসা খরচসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা। বেসরকারি হাসপাতালে ব্যক্তিগত খরচে নিয়েছেন চিকিৎসা।

অভিযোগ আছে, জুলাই আন্দোলনে ত্রিমুখী হামলা ও মারধরের পর অনেক সাংবাদিক সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে পারেননি। তখন সরকারি হাসপাতালে জুলাই আন্দোলনে আহত ব্যক্তির সংখ্যা বেশি ছিল। তাই বেসরকারি হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বাসায় চিকিৎসা নিয়েছেন। এর কোনো কাগজপত্র না থাকলেও হামলার শিকারের ছবি রয়েছে। আবার অনেকের কাগজপত্র পাঠানো হলেও সরকারি গেজেট পর্যন্ত সেগুলো পৌঁছায়নি বলেও মনে করছেন অনেকে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জুলাই আন্দোলনে চট্টগ্রামে একজন ফটোসাংবাদিক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। অনেকে মাথায়, পায়ে, পিঠে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন। টিয়ার শেলেও আহত হয়েছেন। মারধরের শিকার অনেকে পরিহিত ছেঁড়া জামার ছবিও রয়েছে। টিয়ার শেলের প্রভাবে অনেকে রাস্তায় লুটিয়ে পড়লে সহকর্মীরা চোখের সামনে গ্যাস লাইট (আগুন) জ্বালিয়ে দৃষ্টিশক্তি ফেরানোর চেষ্টা করছেন।

তৎকালীন চমেক হাসপাতালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মোহাম্মদ এনামুল হক কালবেলাকে বলেন, তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে জুলাই আন্দোলনে আহত সাংবাদিকদের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। আমরা যেগুলো করেছি তার মধ্যে সাংবাদিক হিসেবে আলাদা কোনো চিহ্নিত করা হয়নি। কারও যদি মেডিকেল ডকুমেন্টস থাকে, সে যদি আন্দোলনে আহতের ছবি দেখাতে পারে; অন্যদের মতো সেও অন্তর্ভুক্ত হবে। তবে জার্নালিস্ট হিসেবে আলাদা কোনো স্বীকৃতি নেই।

আহতের ধরন সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আহতের মধ্যে মারধরের শিকার, গুলিবিদ্ধ ইত্যাদি। তারা সব কাগজপত্র দেওয়ার পর ডাক্তার এবং আন্দোলনকারীদের কাছ থেকে যাচাইবাছাই করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম তথ্য অফিসের ডিপিও কর্মকর্তা মো. আহসান কালবেলাকে বলেন, তথ্য মন্ত্রণালয় বা তথ্য অফিস বা তালিকা সংক্রান্ত বিষয়ে তথ্য মন্ত্রণালয় বা তথ্য অফিসের কারও হাত নেই। যতদূর জানি, আবেদনকারীরা সশরীরে সিভিল সার্জন কার্যালয়ে গিয়েছিলেন। জুলাই বিপ্লব ফাউন্ডেশনে এখনো প্রক্রিয়া চলছে। এখনো অনেকে অনেক কিছু পায়নি।

তথ্যমতে, জুলাই আন্দোলনের শুরু থেকে সংবাদ ও ছবি সংগ্রহ করতে সম্মুখযোদ্ধা ছিলেন চট্টগ্রামের সাংবাদিকরা। ইন্টারনেট সংযোগ না থাকার পরও চট্টগ্রামে জুলাই আন্দোলনের সার্বিক পরিস্থিতি ও ছবি পাঠিয়েছিলেন, যাতে পত্রিকা প্রকাশিত হয়। তবে জুলাই আন্দোলনে হামলার শিকার হওয়া সাংবাদিকরা মূল্যায়িত হয়নি এখনো। শরীরে আঘাত নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন অনেকে।

জুলাইয়ে নগরীর মুরাদপুর, দুই নম্বর গেট, বহদ্দারহাট এলাকা এবং ৪ আগস্ট নগরীর নিউমার্কেট এলাকায় পেশাগত দায়িত্ব পালন করার সময় বেধড়ক মারধর, হামলার শিকার হন তারা। এসময় অনেকের ক্যামেরা ভাঙচুর করা হয়েছে। এরপরও জুলাই আন্দোলনে ছবি কভারেজে পিছপা হননি তারা।

এ আন্দোলনে মারধরের শিকার আহত সাংবাদিকরা হলেন- দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার ফটোসাংবাদিক ও বাংলাদেশ ফটোসাংবাদিক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান, দৈনিক পূর্বকোণের ফটোসাংবাদিক মিয়া আলতাফ, দৈনিক পূর্বদেশ পত্রিকার ফটোসাংবাদিক জাহেদ তালুকদার, দৈনিক বণিক বার্তার ফটোসাংবাদিক আজীম অনন, দৈনিক দেশ রূপান্তরের আকমাল হোসেন, ডেইলি সান পত্রিকার রবিন চৌধুরী ও দৈনিক কালবেলা পত্রিকার ফটোসাংবাদিক মোহাম্মদ সুমন।

২০২৪ সালের ১৯ জুলাই নগরীর মুরাদপুরে জুলাই আন্দোলনে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালীন সময়ে হামলা ও বেধড়ক মারধরের শিকার হন বাংলাদেশ ফটোসাংবাদিক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার ফটোসাংবাদিক মোস্তাফিজুর রহমান, দৈনিক পূর্বকোণের ফটোসাংবাদিক মিয়া আলতাফসহ অনেকে। পুলিশের ছোড়া টিয়ার শেলে আহত হন দৈনিক কালবেলা পত্রিকার চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান সাইদুল ইসলাম, দৈনিক বণিক বার্তার চট্টগ্রাম ডেপুটি ব্যুরো সুজিত সাহা, দীপ্ত টিভির ব্যুরো প্রধান লতিফা রুনা আনসারি ও বণিক বার্তার ফটোসাংবাদিক আজীম অনন। নগরীর চেরাগীপাহাড় মোড়ে হামলা ও মারধরের শিকার হন দৈনিক দেশ রূপান্তর পত্রিকার ফটোসাংবাদিক আকমাল হোসেনসহ অনেকে।

জুলাই আন্দোলনে ভূমিকার স্মৃতিচারণ করে বাংলাদেশ ফটোসাংবাদিক অ্যাসোসিয়েশন চট্টগ্রামের সভাপতি ও দৈনিক ইত্তেফাকের ফটোসাংবাদিক মোস্তাফিজুর রহমান কালবেলাকে বলেন, জুলাই আন্দোলনের সময় চট্টগ্রামে অনেক সাংবাদিক হামলা, মারধরসহ গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন। পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় অস্ত্রধারী অনেকের হামলার শিকার হন ফটোসাংবাদিক মিয়া আলতাফ, শরীফ চৌধুরী, আজীম অনন। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, জুলাই বিপ্লবের এক বছর হয়ে গেলেও এখনো অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো প্রতিনিধি আমাদের খোঁজখবর বা যোগাযোগ পর্যন্ত করেনি।

ফটোসাংবাদিক মিয়া আলতাফ বলেন, জুলাই আন্দোলনে সাংবাদিকরা সরকারদলীয় সমর্থকদের মারধরের শিকার হয়েছেন।

ফটোসাংবাদিক আকমাল হোসেন বলেন, জুলাই আন্দোলনে গণমাধ্যম কর্মীদের অবদান বেশি ছিল। আমরা ফটোসাংবাদিকরা পুলিশ ও সরকারদলীয় লোকজনের মাঝখানে থেকে পেশাগত দায়িত্ব পালন করেছি। অনেকবার মারধরের শিকারও হয়েছি। কিন্তু কোনো অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের ভূমিকা নিয়ে কেউ আলোচনা বা কথাই বলেন না। ২৯ জুলাই চেরাগীপাহাড় এলাকায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পুলিশ গ্রেপ্তারের সময় বাধা দিলে সরকারদলীয় লোকজনের বেধড়ক মারধরের শিকার হই। পুলিশের ছোড়া টিয়ার শেলের গ্যাসে আজীম অনন, বার্তা ২৪-এর সিরাত মঞ্জু ও আমি মাটিতে লুটে পড়ি। এরপর আবারও মুরাদপুর, বহদ্দারহাট, নিউমার্কেট এলাকায় ত্রিমুখী হামলার শিকার হই। এক বছর ঘুরে জুলাই এলো। এ জুলাইয়ে গত বছর জুলাইয়ের স্মৃতি আজও কাঁদায়। এখন পর্যন্ত দায়িত্বরতরা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ বা খোঁজখবর নেয়নি।

ফটোসাংবাদিক আজীম অনন বলেন, জুলাই আন্দোলনে অনেক সাংবাদিক শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছে। সহকর্মীদের কাছে ছবিও রয়েছে। আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গেলেও চিকিৎসা পর্যন্ত পায়নি। তথ্য মন্ত্রণালয়ের তালিকায় অন্তর্ভুক্তকরণের নাম থাকলেও অনেক আহতের ডাটাও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যায়নি।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহ-সমন্বয়ক নীল আফরোজ কালবেলাকে বলেন, আন্দোলনে সাংবাদিকদের ভূমিকা ছিল। তাদের মধ্যে হলুদ সাংবাদিকও ছিল। আমি অনেক সাংবাদিকের খোঁজখবর নিয়েছি, এখনো যোগাযোগ আছে। জুলাই-আগস্টে আহতদের কয়েকটি ক্যাটাগরিতে বিভক্ত করা হয়েছিল। যেমন- অনেকে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন, অনেকে মারধরের শিকার হয়েছেন। যেহেতু তখন এসব বিষয় নিয়ে আমাদের দুজন সমন্বয়ক কাজ করেছিলেন। তারাই ভালো জানবেন।

উল্লেখ্য, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের এক তালিকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা আন্দোলনে সারা দেশে শহীদ/আহত সাংবাদিক ৩০৭ জনের নাম রয়েছে। তার মধ্যে ঢাকায় ১৩১ জন, চট্টগ্রামে ৯ জন, সিলেটে ২৫ জন, বরিশালে ৫ জন, যশোরে একজন, রাজশাহীতে একজন, দিনাজপুরে একজন, খুলনায় একজন, নারায়ণগঞ্জে ৫ জন, গাজীপুরে ৭ জন, বগুড়ায় ৭ জন, মৌলভীবাজারে ৩০ জন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুজন, খাগড়াছড়িতে ৪ জন, কুষ্টিয়ায় ১০ জন, কক্সবাজারে একজন, রংপুরে একজন, লালমনিরহাটে ৪ জন, ফেনীতে ৮ জন, চাঁদপুরে ৩ জন, নোয়াখালীতে ৪ জন, গাইবান্ধায় একজন, সিরাজগঞ্জে ৫ জন, হবিগঞ্জে একজন, নওগাঁয় দুজন, মাদারীপুরে ৩ জন, চুয়াডাঙ্গায় একজন, নাটোরে ৪ জন, নীলফামারিতে একজন, ভোলায় একজন, নেত্রকোনায় একজন, কিশোরগঞ্জ ৪ জন, জয়পুরহাটে একজন, নড়াইলে একজন, সুনামগঞ্জ একজন, পটুয়াখালিতে একজন, শরীয়তপুরে দুজন, কুড়িগ্রামে ৪ জন, পঞ্চগড়ে দুজন, জামালপুরে একজন, নরসিংদী ৩ জন, সাতক্ষীরায় একজন, মুন্সীগঞ্জে একজন, মাগুরার দুজন ও মানিকগঞ্জে ৩ জন।

মন্তব্য করুন

সাইফ পাওয়ার টেকের অধ্যায় শেষ, চট্টগ্রাম বন্দরের দায়িত্বে নৌবাহিনী
দীর্ঘ ১৭ বছর পর চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) থেকে বিদায় নিচ্ছে বর্তমানে সবচেয়ে আলোচিত প্রতিষ্ঠান সাইফ পাওয়ার টেক। এবার চট্টগ্রাম বন্দরের দায়িত্ব নেবে নৌবাহিনী। চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায় আগামীকাল সোমবার (৭ জুলাই) থেকে টার্মিনাল পরিচালনা করবে নৌবাহিনীর অধীন প্রতিষ্ঠান চিটাগং ড্রাইডক লিমিটেড। এজন্য প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে এনসিটি পরিচালনার চুক্তি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ।  আগামীকালই এই চুক্তি হবে বলে কালবেলাকে নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক। তিনি বলেছেন, সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ড্রাইডকের সঙ্গে ছয় মাসের জন্য এনসিটি পরিচালনার চুক্তির সিদ্ধান্ত বন্দর কর্তৃপক্ষের বোর্ড সভায় অনুমোদিত হয়েছে। সোমবার চুক্তির পর সাইফ পাওয়ার টেক আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব হস্তান্তর করবে। কাল থেকে এনসিটি পরিচালনা করবে চিটাগাং ড্রাইডক। চিটাগং ড্রাইডক লিমিটেড রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন এবং বাংলাদেশ নৌবাহিনী পরিচালিত সামরিক জাহাজ মেরামতকারী প্রতিষ্ঠান। চট্টগ্রাম বন্দরের সীমানার মধ্যেই এটির অবস্থান। এনসিটির পরিচালনা ছাড়লেও সাইফ পাওয়ারটেক চুক্তি অনুযায়ী বন্দরের অন্যতম টার্মিনাল চিটাগং কনটেইনার টার্মিনাল (সিসিটি) পরিচালনা করতে থাকবে। চট্টগ্রাম বন্দরের ৪টি কনটেইনার টার্মিনালের বাকি দুটি হলো— জেনারেল কার্গো বার্থ (কনটেইনার ও বাল্ক-জিসিবি) এবং পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল (পিসিটি)।
সাইফ পাওয়ার টেকের অধ্যায় শেষ, চট্টগ্রাম বন্দরের দায়িত্বে নৌবাহিনী
চসিক মেয়রের সঙ্গে কানাডার ফেডারেল এমপির বৈঠক
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন কানাডার টরন্টো সফরে দেশটির ফেডারেল সংসদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী নাথানিয়েল এরস্কাইন-স্মিথের সঙ্গে এক বৈঠক করেছেন। এ সময় তারা দুই শহর এবং দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক, সামাজিক ও পরিবেশগত নানা খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে আলোচনা করেন। শনিবার (৫ জুলাই) কানাডার টরন্টোতে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। নাথানিয়েল এরস্কাইন-স্মিথ ২০১৫ সাল থেকে টরন্টোর বিচেস- ইস্ট ইয়র্ক এলাকার সংসদ সদস্য। তিনি কানাডার হাউজিং, অবকাঠামো ও কমিউনিটি উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের সাবেক মন্ত্রী। একই সঙ্গে তিনি কানাডা-বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফ্রেন্ডশিপ গ্রুপের চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। বৈঠকে চট্টগ্রাম ও কানাডার বন্দরগুলোর মধ্যে সরাসরি বাণিজ্যিক রুট স্থাপন, শুল্ক ও কাস্টমস প্রক্রিয়া সহজীকরণ, দক্ষ জনশক্তি রপ্তানি ও শিক্ষার্থী বিনিময়সহ অভিবাসন খাতে নতুন সম্ভাবনার কথা আলোচনা হয়। পরিবেশ রক্ষায় সবুজ অবকাঠামো, বন্যা ব্যবস্থাপনা ও জলবায়ু অভিযোজন নিয়ে যৌথ কাজের ক্ষেত্র তৈরি করার বিষয়েও আগ্রহ প্রকাশ করেন দুই নেতা। রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় কানাডার সহায়তা অব্যাহত রাখা এবং স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও দুর্যোগ মোকাবিলায় যৌথ উদ্যোগ নেওয়া নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়। সমুদ্রবন্দর, লজিস্টিকস, সবুজ প্রযুক্তি ও জনস্বাস্থ্য খাতে গবেষণা ও প্রযুক্তি স্থানান্তরের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। বৈঠক শেষে মেয়র ড. শাহাদাত হোসেন বলেন, নাথানিয়েল এরস্কাইন-স্মিথের মতো একজন অভিজ্ঞ ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত নেতার সঙ্গে আলোচনা অত্যন্ত ফলপ্রসূ হয়েছে। এই সংলাপ দুই দেশের সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করবে। নাথানিয়েল এরস্কাইন-স্মিথ বলেন, বাংলাদেশ ও কানাডার মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা আরও গভীর করতে তিনি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। দুই শহরের মধ্যে এই ধরনের সংলাপ দীর্ঘমেয়াদে বাস্তব সুফল বয়ে আনবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
চসিক মেয়রের সঙ্গে কানাডার ফেডারেল এমপির বৈঠক
বৈষম্যবিরোধী নেতার বিরুদ্ধে ‘চাঁদাবাজির’ অভিযোগ
দুই কোটি টাকার চাঁদা না পেয়ে জাতীয় শ্রমিক লীগের মেঘনা পেট্রোলিয়াম এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদককে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ উঠেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চট্টগ্রাম নগরের সদস্যসচিব নিজাম উদ্দিনের বিরুদ্ধে। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি জানান, এটি একটি ষড়যন্ত্র। শনিবার (৫ জুলাই) চট্টগ্রাম নগর পুলিশ কমিশনার হাসিব আজিজ বরাবর অভিযোগ করে একটি চিঠি দিয়েছেন রিয়াজুল জান্নাত নামের এক নারী।  রিয়াজুল জান্নাত জামায়াতে ইসলামীর বাগমনিরাম দক্ষিণ সাংগঠনিক ওয়ার্ডের সেক্রেটারি নওশেদ জামালের স্ত্রী।  এর আগে গত বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) নওশেদ জামালকে গ্রেপ্তার করেছে কোতোয়ালি থানা। পুলিশ বলছে, নওশেদ জাতীয় শ্রমিক লীগ মেঘনা পেট্রোলিয়াম এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। চিঠিতে রিয়াজুল জান্নাত উল্লেখ করেন, নওশেদ জামাল চট্টগ্রামে মেঘনা পেট্রোলিয়াম এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ও জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তিনি জামায়াতে ইসলামীর রুকন, পাশাপাশি বাগমনিরাম দক্ষিণ সাংগঠনিক ওয়ার্ডের সেক্রেটারি। কিছুদিন ধরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা পরিচয় দিয়ে নেজাম (নিজাম) উদ্দিন নামের এক ব্যক্তি তার স্বামীর কাছ থেকে দুই কোটি টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিলেন। চাঁদা না দেওয়ায় তার স্বামীকে ফাঁসানো হয়। রিয়াজুল জান্নাত চিঠিতে একটি ভিডিওর কথা উল্লেখ করেন। ৬ মিনিট ৫০ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে নিজাম উদ্দিনকে একটি কক্ষে বসে মোবাইল ফোনে কথা বলতে দেখা যায়। সেখানে একপর্যায়ে তিনি বলেন, ‘আরে ভাই শোনেন, পুলিশ পারে না এমন কিছু নাই...। আমি বলতে চাচ্ছি, আপনার যার প্রতি ক্ষোভ, যাদের প্রতি ক্ষোভ, ওই তিনজনকে হলেই তো হইছে... আপনি যদি চান ওই তিনজনকে... করে দিতে পারবে... দেশে থাকতে হবে, এটা মাথায় রাইখেন।’ এদিকে ফেসবুকে পোস্ট করে নিজাম উদ্দিন দাবি করেছেন তিনি চাঁদা চাননি। এ ছাড়া ওই নারীর উল্লিখিত ভিডিওটি পুরোনো। পোস্টে তিনি উল্লেখ করেন, ‘ভিডিওটি পতেঙ্গা থানা এলাকার, তা-ও চার থেকে পাঁচ মাস আগের। অথচ ওই ব্যক্তি গ্রেপ্তার হয়েছেন মাত্র দুই দিন আগে কোতোয়ালি থানার একটি মামলায়। ভিডিওতে কোথাও ‘টাকা দাবির’ তথ্য না থাকার পরও এটিকে ‘চাঁদাবাজির’ তকমার ঢাল হিসেবেই ব্যবহার করছে একটি চক্র।’ নিজাম উদ্দিন কালবেলাকে জানান, এটি একটি ষড়যন্ত্র। আমি ওসিকে বলেছি, আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট হলে নওশেদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে, আর না হয় ছেড়ে দিতে। কিন্তু তারা এখন দাবি করছেন, আমি তাকে ধরিয়ে দিয়েছি। চট্টগ্রাম নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) মাহমুদা বেগম কালবেলাকে জানান, এ ধরনের অভিযোগ সাধারণত সংশ্লিষ্ট থানায় কিংবা উপকমিশনার কার্যালয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হয় অথবা পুলিশ কমিশনার এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি করে ব্যবস্থা নেবেন।
বৈষম্যবিরোধী নেতার বিরুদ্ধে ‘চাঁদাবাজির’ অভিযোগ
মদিনা থেকে ফিরেই চট্টগ্রামে রানওয়েতে আটকে গেল বিমান
চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সৌদি আরবের মদিনা থেকে আসা হজযাত্রীদের একটি ফ্লাইট রানওয়েতে আটকা পড়েছে। এতে দুই ঘণ্টা রানওয়ে বন্ধ ছিল। ওই ফ্লাইটে ৩৭৮ জন হজযাত্রী ছিলেন। শনিবার (৫ জুলাই) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইটটি (বিজি-১৩৮) অবতরণের পর এ ঘটনা ঘটে।  শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইব্রাহীম খলিল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, মদিনা থেকে হজ্জযাত্রী নিয়ে চট্টগ্রামে আসা বিমান বাংলাদেমের ফ্লাইট ল্যান্ড করার পর রানওয়ে-২৩ প্রান্তে এসে যান্ত্রিক ত্রুটিজনিত কারণে আটকা পড়ে। ত্রুটি সারিয়ে বিমানটিকে বেলা ১১টা ২০ মিনিটে রানওয়ে থেকে নিরাপদে সরিয়ে এপ্রোনে নিয়ে আসা হয়েছে। অনাকাঙ্ক্ষিত এই ইস্যুতে চট্টগ্রাম বিমানবন্দরের রানওয়ে প্রায় ২ ঘণ্টা বন্ধ ছিল। ফ্লাইটে ৩৭৮ জন হজযাত্রী ছিলেন। এদিকে ক্ষুদে বার্তায় চট্টগ্রাম বিমানবন্দরের সহকারী সিকিউরিটি সুপারভাইজার আবদুল আলম জানান, বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইটটি হজ্জযাত্রী নিয়ে মদিনা থেকে চট্টগ্রামে অবতরণ করার পরে রানওয়ের শেষ মাথা আটকে যায়। এরপর বিমানের সামনের চাকা টেনে ঠিক করে দিলে পরবর্তী সময়ে বিমান ইঞ্জিন স্টার্ট করে বে-তে চলে আসে। বর্তমানে চট্টগ্রাম বিমান বন্দরে উড্ডয়ন ও অবতরণ কার্যক্রম চালু রয়েছে।  
মদিনা থেকে ফিরেই চট্টগ্রামে রানওয়েতে আটকে গেল বিমান
চট্টগ্রামে ৩ হাজার লিটার অকটেনসহ একজন আটক
চট্টগ্রামে ৩ হাজার লিটার অকটেনসহ একজন আটক
চট্টগ্রামে চালু হলো থাইল্যান্ডের মেডপার্ক হাসপাতালের অফিস
চট্টগ্রামে চালু হলো থাইল্যান্ডের মেডপার্ক হাসপাতালের অফিস
জামায়াতে যোগ দিলেন জাপা নেতা
জামায়াতে যোগ দিলেন জাপা নেতা
পুলিশ প্রশাসন সংস্কারে সব ছাত্র-সংগঠনের আন্দোলন এক ব্যানারে
পুলিশ প্রশাসন সংস্কারে সব ছাত্র-সংগঠনের আন্দোলন এক ব্যানারে