বৃহস্পতিবার, ২৮ আগস্ট ২০২৫, ১৩ ভাদ্র ১৪৩২
ইবিতে মাস্টার্সে পুনঃভর্তি

ছাত্রদল নেতাদের বিশেষ বিবেচনা, অন্যদের ক্ষেত্রে বঞ্চনা!

ইবি প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৫ জুলাই ২০২৫, ১০:৫৬ পিএম
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটক। ছবি : সংগৃহীত
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটক। ছবি : সংগৃহীত

একাডেমিক অর্ডিন্যান্সের পুনঃভর্তির ধারা লঙ্ঘন করে ছয় ছাত্রদল নেতাকে নিয়মিত মাস্টার্সে (স্নাতকোত্তর) পুনঃভর্তি করিয়েছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) কর্তৃপক্ষ। অন্যদিকে যৌক্তিক কারণ থাকলেও পুনঃভর্তির সুযোগ দেওয়া হয়নি একাধিক সাধারণ শিক্ষার্থীকে।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ভাষ্য, রাজনৈতিক প্রতিবন্ধকতার কারণে শিক্ষাজীবন শেষ করতে না পারা শিক্ষার্থীদের শুধু নিয়মিত মাস্টার্সে ভর্তির সুযোগ দেওয়া হয়েছে। অবশ্য এ ধরনের কোনো সমস্যা না থাকা সত্ত্বেও আনোয়ার পারভেজ নামে এক ছাত্রদল নেতাকে পুনঃভর্তির সুযোগ দিয়েছে প্রশাসন। এমন পরিস্থিতিতে ভুক্তভোগীরা প্রশ্ন তুলে বলেছেন, ছাত্রদল নেতা বলে বিশেষ বিবেচনা, তবে অন্যদের ক্ষেত্রে কেন বঞ্চনা।

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক অর্ডিন্যান্সের পুনঃভর্তির ধারা অনুযায়ী, পরপর দুই বছর কোর্স সম্পন্ন করতে ব্যর্থ হলে নিয়মিত মাস্টার্সে পুনঃভর্তির সুযোগ পাবেন না শিক্ষার্থীরা। তবে এই নিয়ম লঙ্ঘন করে সম্প্রতি ছাত্রদলের ছয় নেতাকে ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের নিয়মিত মাস্টার্সে পুনঃভর্তি নিয়েছে প্রশাসন।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, ৫ আগস্টের পটপরিবর্তনের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে রাজনৈতিক প্রতিবন্ধকতার কারণে শিক্ষাজীবন শেষ করতে পারেননি এমন শিক্ষার্থীদের নিয়মিত মাস্টার্সে ভর্তির সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। একইভাবে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়েও বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েছে প্রশাসন। অর্ডিন্যান্সের বাইরে শুধু রাজনৈতিক প্রতিবন্ধকতার বিষয়টিকে বিবেচনায় নিয়ে তাদের ভর্তি নেওয়া হয়েছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন রাজনৈতিক বিবেচনার কথা বললেও ভর্তি হওয়া সবাই রাজনৈতিক কারণ দেখিয়ে পুনঃভর্তির আবেদন করেননি।

ইবি শাখা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ার পারভেজ রাজনৈতিক নয়, পারিবারিক কারণ দেখিয়ে পুনঃভর্তি হয়েছেন বলে জানা গেছে। তিনি যে পারিবারিক কারণ দেখিয়েছেন, সেটিও মিথ্যা বলে জানা গেছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ইবি শাখা ছাত্রদলের নতুন কমিটিতে পদ পেতে বিভিন্ন মাধ্যমে তদবির করছেন আনোয়ার। তাই ছাত্রত্ব টিকিয়ে রাখতেই নিয়মবহির্ভূতভাবে ভর্তি হয়েছেন তিনি।

জানা যায়, ভর্তি হওয়া অন্য ছাত্রদল নেতাদের প্রকৃত রাজনৈতিক সমস্যা থাকলেও আনোয়ার পারভেজের কোনো পারিবারিক ও রাজনৈতিক সমস্যা ছিল না। আওয়ামী লীগ শাসনামলে তাকে ক্যাম্পাসে অবাধে চলাচল, আড্ডা দেওয়াসহ অন্যান্য কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করতে দেখা যেত। বিভিন্ন সময় আন্তঃবিভাগ ও আন্তঃহল ফুটবল প্রতিযোগিতায়ও অংশগ্রহণ করেন তিনি। রাজনৈতিক প্রতিবন্ধকতার কারণে যেখানে অনেক আগেই হল ছাড়তে হয়েছিল ছাত্রদলের অন্য নেতাকর্মীদের, সেখানে ২০১২ থেকে ২০১৭ সালের ১৯ নভেম্বর পর্যন্ত তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলেই থাকতেন। এরপর আনোয়ার পারভেজ হলে থাকার সুযোগ না পেলেও তাকে ক্যাম্পাসে চলাফেরা, আড্ডা দেওয়াসহ আন্তঃবিভাগ ও আন্তঃহল ফুটবল টুর্নামেন্টে অংশ নিতে দেখা যেত।

একাডেমিক শাখা ও বিভাগ সূত্রে জানা যায়, আনোয়ার পারভেজ পরিসংখ্যান বিভাগের স্নাতক (অনার্স) ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। অনার্স শেষে ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষে একই বিভাগে মাস্টার্সে ভর্তি হন। তবে তখন কোর্স সম্পন্ন করতে পারেননি তিনি। ফলে ৫ আগস্টের পর পারিবারিক সমস্যার কারণে কোর্স সম্পন্ন করতে পারেননি উল্লেখ করে বিভাগের সভাপতির মাধ্যমে রেজিস্ট্রারের কাছে পুনঃভর্তির আবেদন করেন আনোয়ার। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিভাগের একাডেমিক কমিটির ১৯৩তম সভায় তাকে বিশেষ বিবেচনায় পুনঃভর্তির সুপারিশ করা হয়। পরে সেটি একাডেমিক শাখায় গেলে একাডেমিক অর্ডিন্যান্সের পুনঃভর্তির ধারা অনুযায়ী এমএসসি ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে পুনঃভর্তির সুযোগ নেই উল্লেখ করে পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য উপাচার্য বরাবর পাঠানো হয়। এতে প্রথমে উপাচার্য পুনঃভর্তির অনুমোদন দিলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ডিন্যান্স বহির্ভূত হওয়ায় পরে তা স্থগিত করে দেন।

পরবর্তীতে পারভেজসহ অন্য পাঁচ ছাত্রদল নেতার পুনঃভর্তির বিষয়টি একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় উঠলে সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিষয়টি যাচাই-বাছাইয়ের জন্য কমিটি গঠন করা হয়। পরে কমিটির পক্ষ থেকে তাদের ভর্তির জন্য সুপারিশ করা হলে সিন্ডিকেটে তা অনুমোদন হয়।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মনজুরুল হক কালবেলাকে বলেন, ‘আবেদনের সময় আনোয়ার পারভেজ রাজনৈতিক কারণ দেখিয়েছিল। তবে প্রকৃত বিষয় যাচাই-বাছাই কমিটি বলতে পারবে। তারা আমাদের যেভাবে সুপারিশ করেছে, আমরা সে অনুযায়ী কাজ করেছি।’

যাচাই-বাছাই কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. নজিবুল হক বলেন, ‘ওই সময় আনোয়ার পারভেজের সমস্যা থাকায় সে পরীক্ষা দিতে পারেনি।’

তবে তার দীর্ঘ সময় আবাসিক হলে অবস্থান ও ক্যাম্পাসে অবাধ বিচরণের বিষয়টি তুলে ধরা হলে অধ্যাপক নজিবুল বলেন, ‘মূলত একাডেমিক কাউন্সিলের আলোকেই আমরা সুপারিশ করেছি।’

তবে আনোয়ার পারভেজকে মাস্টার্সে পুনঃভর্তির সুযোগ দেওয়ায় ক্ষুব্ধ তার নিজ সংগঠন ইবি ছাত্রদলেরই অনেকে। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে ইবি ছাত্রদলের এক নেতা কালবেলাকে বলেন, ‘আমরা আমাদের বিভাগের স্যারদের সহায়তায় ফ্যাসিবাদের আমলে শিক্ষাজীবন শেষ করেছি। ইবি ছাত্রদলের বর্তমান কমিটির আহ্বায়কও সেই সময়টাতে অনার্স-মাস্টার্স শেষ করেছেন। এমনকি তিনি নিয়মিত অনার্স-মাস্টার্স শেষ করে সান্ধ্যকালীন মাস্টার্সও শেষ করেছেন। বর্তমানেও তার সান্ধ্যকালীন একটি মাস্টার্স চলমান রয়েছে। সে জায়গা থেকে আমরা পারলে সে (আনোয়ার) কেন পারল না? সে মূলত কমিটিতে আসার জন্য ছাত্রত্ব টিকিয়ে রাখতেই তখন পরীক্ষায় অংশ নেয়নি।’

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আনোয়ার পারভেজ বলেন, ‘ওই সময় আমার পরীক্ষা দেওয়ার কোনো সুযোগ ছিল না। আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগগুলো আনা হয়েছে তার সবগুলোই ভিত্তিহীন।’

এদিকে লোকপ্রশাসন বিভাগের অং খুমী নামে এক শিক্ষার্থী জানান, পার্বত্য চট্টগ্রামে বাড়ি হওয়ায় ও রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে তার দুবার গ্যাপ পড়েছিল। পরে তিনি পুনঃভর্তির আবেদন করলে তা নাকচ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন দপ্তরে ঘোরাঘুরি করেও কোনো প্রতিকার পাননি। এ ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের আরও বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী যৌক্তিক সমস্যার কারণে একাডেমিক গ্যাপ যাওয়ায় পুনঃভর্তি হতে চাইলেও কর্তৃপক্ষ সুযোগ দেয়নি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান বলেন, বিষয়গুলো মূলত একাডেমিক কাউন্সিলেই সিদ্ধান্ত হয়। তবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের কেন সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না, জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাননি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ কালবেলাকে বলেন, ‘একাডেমিক কাউন্সিলে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আমাকে ফোন দিয়েছেন কেন?’

মন্তব্য করুন

ঢাবি শিক্ষার্থী মুন্নাছ বাঁচতে চান
দুরারোগ্য ব্যাধি লিউকেমিয়াতে আক্রান্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রসায়ন বিভাগের ১০১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. মুন্নাছ আলী। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন-বর্তমান শিক্ষক-শিক্ষার্থী সবার সহযোগিতায় তার চিকিৎসার প্রায় পুরো টাকা জোগাড় হয়েছে। গত ৬ মাস ধরে ভারতের চেন্নাইয়ে চিকিৎসাধীন তিনি।  জানা গেছে, প্রায় ৩০টি কেমোথেরাপির পর তার শারীরিক অবস্থা অনেকটাই উন্নতির দিকে ছিল। আগামী মাসে তার একটা কেমোথেরাপি বাকি আছে।  তবে, অল্প সময়ের ব্যবধানে এত কেমোথেরাপির পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ায় তার নাক ও মাথার খুলির মাঝের হাড়ে ক্ষত দেখা দিয়েছে। যে কারণে কিছুদিন যাবৎ তিনি ডান চোখে কিছুই দেখতে পাচ্ছেন না। পাশাপাশি তার বাঁ চোখের দৃষ্টিশক্তিও কমে গেছে। এ পরিস্থিতিতে চিকিৎসকরা তাকে ২১ দিনের অ্যান্টিবায়োটিক দিয়েছেন। এতে সুস্থ না হলে তার সার্জারি করা লাগবে। চিকিৎসকরা তাকে  হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দিলেও টাকার অভাবে তাকে বাসা থেকেই চিকিৎসা নিতে হচ্ছে।  চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, অ্যান্টিবায়োটিক ও সার্জারি মিলিয়ে তার চিকিৎসার জন্য আরও প্রায় ৮-৯ লাখ টাকা লাগবে। এ পর্যন্ত তার চিকিৎসার জন্য প্রায় পঞ্চাশ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। তার পরিবারের পক্ষে এই টাকা জোগাড়ের সামর্থ্য না থাকায় সবার সহায়তা কামনা করেছেন মুন্নাছ। সাহায্য পাঠানোর ঠিকানা: বিকাশ/নগদ: 01884654418 অথবা One bank Account number: 1062460000059, Account name: Md. Munnas Ali, Routing number: 165261342, Branch Name: Gulshan Islami Banking Branch
ঢাবি শিক্ষার্থী মুন্নাছ বাঁচতে চান
ঢাবির হল থেকে ছাত্রলীগ নেতা আটক 
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মাস্টারদা সূর্যসেন হল থেকে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগ নেতা আল-আমিনকে আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছেন শিক্ষার্থীরা। রোববার (৬ জুলাই) দুপুর সাড়ে বারোটায় তাকে হল ফটক থেকে আটক করা হয়। আল-আমিন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের উপ-নাট্য ও বিতর্ক বিষয়ক সম্পাদক এবং ঢাবি ছাত্রলীগের সহ-সদস্য ছিলেন।  এ বিষয়ে ঢাবির ২০২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী সাকিবুল হাসান বলেন, কয়েকজন জুনিয়র হলে ছাত্রলীগ নেতা আল-আমিনকে দেখে আমাদের খবর দেয়। আমরা তার পরিচয় নিশ্চিত হয়ে তাকে আটক করে পুলিশে খবর দেই। তিনি হলে থাকাকালীন শিক্ষার্থীদের গেস্টরুমে নামে নানাভাবে নির্যাতন করতেন। এমনকি পরীক্ষার সময়ও শিক্ষার্থীদের জোরপূর্বক ছাত্রলীগের প্রোগ্রামে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে।  এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমদ বলেন, আল-আমিনকে আটক করে শাহবাগ থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এজন্য ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করা হবে। তার বিরুদ্ধে বরগুনা থানায় আরও দুটি মামলা রয়েছে। 
ঢাবির হল থেকে ছাত্রলীগ নেতা আটক 
সুপারিশের বেড়াজালে ডাকসুর নির্বাচন কমিশন 
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ (ডাকসু) নির্বাচন কেন্দ্র করে বিভিন্ন ছাত্রসংগঠন, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে বসছে সম্প্রতি গঠিত হওয়া নির্বাচন কমিশনের রিটার্নিং কর্মকর্তারা। বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে আসা নানা সুপারিশ নিয়ে বেড়াজালে পড়েছে নির্বাচন কমিশন। এসব সুপারিশের কতটুকুই বা পূরণ করতে পারবে বিশ্ববিদ্যালয় ও নির্বাচন কমিশন তা নিয়ে তৈরি হয়েছে শঙ্কা। নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, বিভিন্ন অংশীজনের কাছ থেকে ৫১টি সুপারিশ পেয়েছে নির্বাচন কমিশন। গত বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে এসব সুপারিশ জমা দিয়েছে কমিশন। এসব সুপারিশকে দুই ভাগ করে এক ভাগের ৩১টি সুপারিশ‌ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও ২১টি সুপারিশ নির্বাচন কমিশন সমাধান করবে বলে জানা যায়।  নির্বাচন কমিশনের অধীনে যেসব সুপারিশ রয়েছে এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য ব্রেইল পদ্ধতিতে ব্যালট পেপার ছাপানো, জুলাই/আগস্টের প্রোগ্রাম মাথায় রেখে ও পরীক্ষার শিডিউল বিবেচনা করে নির্বাচনের তপশিল ঘোষণা করা, শারীরিকভাবে অক্ষম শিক্ষার্থীদের জন্য হুইলচেয়ারের ব্যবস্থা রাখা, রিডিং রুমে গিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা না চালানো, নির্বাচনী পোস্টার নিষিদ্ধ করা, ক্লাস চলাকালীন মাইক বন্ধ রাখা, পোলিং এজেন্ট রাখা, ছুটির দিন ভোটের আয়োজন করা, ভোটগ্রহণ ও গণনার কাজে শিক্ষকদের সংযুক্ত করা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যেসব সুপারিশ নিয়ে কাজ করবে এর মধ্যে রয়েছে, ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থীদের নির্বাচন করার অথবা ভোট দেওয়ার সুযোগ দেওয়া, আনসারদের প্রক্টরিয়াল টিমে সিভিল ড্রেসে অন্তর্ভুক্ত করা, নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিচার এবং তারা যাতে কোনোভাবে নির্বাচনে অংশ নিতে না পারে সেটা নিশ্চিত করা, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করা, ঢাবি শিক্ষার্থীদের ফেসবুক গ্রুপ 'ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সংসদ-১' ও ' ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সংসদ-২'-এর কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করা, নির্বাচনের ক্ষেত্রে নিয়মিত শিক্ষার্থী হওয়া ও বয়সের সীমা নির্ধারণ করা, হলগুলোতে রাজনৈতিক কার্যক্রমের ওপর থাকা নিষেধাজ্ঞা তুলে দেওয়া, মিথ্যা প্রচারণা বন্ধ করা, ফ্যাসিস্ট শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের বিচার নিশ্চিত ও নির্বাচন থেকে দূরে রাখা, গঠনতন্ত্র বিষয়ে ঐকমত্য তৈরির জন্য প্রশাসন ও ছাত্রসংগঠনগুলোর সঙ্গে সভার আয়োজন করা। নির্বাচন কমিশন সূত্র জানায়, চলতি সপ্তাহে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি, বিভিন্ন ছাত্রসংগঠন, বিভিন্ন বাস রুটের কমিটি ও বিভিন্ন বিভাগ ও অনুষদের শ্রেণি প্রতিনিধিদের (সিআর) সঙ্গে সভা করবে কমিশন। এরপর অংশীজনের দেওয়া সুপারিশের মধ্য কোনগুলো নির্বাচন কমিশন ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বাস্তবায়ন করতে পারবে, সেটা নিয়ে বিস্তারিত জানানো হবে। সূত্র জানায়, এসব শেষে আগামী সপ্তাহে নির্বাচন কমিশন ডাকসু ও হল সংসদের নির্বাচনের তপশিল ঘোষণা করতে পারে, তবে সেটি অনেকটাই অনিশ্চিত। এ বিষয়ে কমিশনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মো. জসীম উদ্দিন কালবেলাকে বলেন, আমরা অনেক সুপারিশ পেয়েছি এবং সেগুলো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে দেওয়া হয়েছে। আবার বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে বসা হবে। এরপর তাদের কাছ থেকে যেসব সুপারিশ আসবে সেগুলো আগের সুপারিশের সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে দেওয়া হবে।  তিনি বলেন, ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের নির্বাচনে সুযোগ দেওয়ার সুপারিশ এসেছে; কিন্তু সাংবিধানিকভাবে সেটা হয় না। এজন্য কীভাবে তাদের অন্তর্ভুক্ত করা যায়, সেটা নিয়ে ভাবা হবে। দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীরা যাতে ভোট দিতে পারে এজন্য ব্রেইল পদ্ধতিতে ব্যালট পেপার ছাপানোর সুপারিশ গ্রহণ করা হয়েছে। এই সবকিছু ঠিক না হওয়া ছাড়া এখন ঠিকভাবে বলা যাচ্ছে না, কবে আমরা তপশিল ঘোষণা করতে পারব।
ডাকসুর নির্বাচন কমিশন 
অভিযুক্তকে বাঁচাতে মানববন্ধন করতে বললেন তদন্ত কমিটির সদস্য 
হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (হাবিপ্রবি) ছাত্রদল কর্মী শামীম আশরাফীর নেতৃত্বে হাবিপ্রবি সাংবাদিক সমিতির (হাবিপ্রবিসাস) অফিসরুম ভাঙচুরের ঘটনায় কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের পক্ষ থেকে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তবে অভিযুক্তকে বাঁচাতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করে মানববন্ধন করার নির্দেশনা দিয়েছেন ওই তদন্ত কমিটিরই সদস্য ও কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. রাব্বি হাসান। এমনি একটি স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।  শনিবার (০৫ জুলাই) সকালে সাংবাদিক সমিতির অফিস ভাঙচুরের তদন্তে  ৩ সদস্যবিশিষ্ট একটি একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিতে কেন্দ্রীয় সংসদের সহসভাপতি জকির উদ্দিন আবির, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. রাব্বি হাসান ও সাইদুল ইসলাম রয়েছেন।  এদিন তদন্ত কমিটি গঠনের পরপরই হঠাৎ ফেসবুকে একটি স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘুরতে দেখা যায়। যেখানে ওই তদন্ত কমিটিরই সদস্য রাব্বি হাসান হোয়াটঅ্যাপে কাউকে লেখেন, ‘একটা মানববন্ধন করাও ছেলেটার ব্যাচমেটগুলো দিয়ে। করতে পারলে খুব ভালো হবে৷’ এ বিষয়ে হাবিপ্রবি সাংবাদিক সমিতির সভাপতি গোলাম ফাহিমুল্লাহ বলেন, কেন্দ্রীয় সংসদ কর্তৃক গঠিত কমিটি যখন তদন্তের আগেই একটা বিভাগকে সাংবাদিক সমিতির বিপক্ষে দাঁড় করানোর নির্দেশনা দিয়ে বিভাগীয় ইস্যু তৈরির পরামর্শ দেয়। তখন তদন্ত কমিটির নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠে। এখন মনে হচ্ছে কেন্দ্রীয় সংসদের তদন্ত কমিটি আই ওয়াশ মাত্র। হাবিপ্রবি সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক তানভীর হোসাইন বলেন, ভাঙচুরের ঘটনায় কেন্দ্রীয় ছাত্রদল যে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে সেটার প্রতি আমাদের ভরসা ছিল। কিন্তু কমিটি গঠনের কিছুক্ষণ পর একটি স্কিনশট ভাইরাল হলো। যেখানে তদন্ত কমিটির একজন সদস্য দোষীদের সহায়তা করছেন। বিষয়টা দুঃখজনক। এই তদন্ত কমিটি সঠিক তদন্ত রিপোর্ট জমা দেবে কি না সেটা নিয়ে আমাদের সন্দেহ রয়েছে। আমরা এই তদন্ত কমিটির ওপর ভরসা করতে পারছি না। এ বিষয়ে জানতে কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তদন্ত কমিটির সদস্য মো. রাব্বি হাসানকে একাধিক বার কল দেয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
অভিযুক্তকে বাঁচাতে মানববন্ধন করতে বললেন তদন্ত কমিটির সদস্য 
‘বিআইটি মডেল’ বাস্তবায়ন দাবিতে উত্তাল ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ
‘বিআইটি মডেল’ বাস্তবায়ন দাবিতে উত্তাল ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ
দাবি-দাওয়া, খাওয়া-দাওয়া ক্যাম্পাসে নির্বাচনী জোয়ার
দাবি-দাওয়া, খাওয়া-দাওয়া ক্যাম্পাসে নির্বাচনী জোয়ার
ছাত্রদল নেতা বলে কথা!
ছাত্রদল নেতা বলে কথা!
জবির মার্কেটিং বিভাগের ১৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন
জবির মার্কেটিং বিভাগের ১৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন