বৃহস্পতিবার, ২৮ আগস্ট ২০২৫, ১৩ ভাদ্র ১৪৩২

ব্রিকসের দেশগুলোর ওপর আরও ১০ শতাংশ শুল্কের হুমকি

কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ০৭ জুলাই ২০২৫, ০১:১৭ পিএম
আপডেট : ০৩ আগস্ট ২০২৫, ০৪:০৪ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
ছবি : সংগৃহীত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ব্রিকস জোটের সহযোগীদের ওপর নতুন করে ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন। সোমবার (৭ জুলাই) এ ঘোষণা দেন তিনি। খবর শাফাক নিউজের।

ট্রাম্প বলেন, ব্রিকসের ‘অ্যান্টি-আমেরিকান’ নীতিগুলোর সমর্থনে থাকা কোনো দেশের জন্য কোনো ছাড় থাকবে না। তবে তিনি সুনির্দিষ্ট করে উল্লেখ করেননি, কোন নীতিগুলোর কারণে এ সিদ্ধান্ত।

ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরিওতে অনুষ্ঠিত ব্রিকসের বার্ষিক সম্মেলনের সমাপ্তি ঘোষণার পর এ মন্তব্য আসে। সম্মেলনে ব্রিকস সদস্যরা বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউটিও) কেন্দ্রিক, নিয়মভিত্তিক, স্বচ্ছ ও বৈষম্যহীন বহুপক্ষীয় বাণিজ্য ব্যবস্থার প্রতি প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।

ওয়াশিংটনে মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেনসেন্টও নিশ্চিত করেছেন, আগামী ১ আগস্ট থেকে নতুন শুল্ক কার্যকর হবে। তবে নির্দিষ্ট দেশগুলো যদি তার আগেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তিতে পৌঁছায়, তাহলে এ শুল্ক এড়ানো যাবে।

এর আগে গত এপ্রিলেই ট্রাম্প ১০-৫০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছিলেন। যেসব দেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য উদ্বৃত্ত রাখছে তাদের বিরুদ্ধে এ ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। তবে সে সময় আলোচনার সুযোগ রেখে চূড়ান্ত সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৯ জুলাই।

নতুন এ শুল্ক নীতি ব্রিকস জোটভুক্ত দেশগুলোর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য সম্পর্কে নতুন উত্তেজনার ইঙ্গিত দিচ্ছে। ব্রিকসের সদস্য দেশগুলো হলো ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকা।

মন্তব্য করুন

‘কার্টফেল ক্যোনিগ’ জার্মানির আলুর কিংবদন্তি
জার্মানির খাদ্যসংস্কৃতির অন্যতম প্রধান চরিত্র ‘কার্টফেল’, সহজ ভাষায় আমরা যাকে আলু বলেই চিনে থাকি। কিন্তু এই সাধারণ আলুর পেছনে লুকিয়ে আছে এক মজার ইতিহাস আর কিছু জনপ্রিয় কল্পকাহিনী, যা আজও জার্মানদের মুখে মুখে ঘুরে বেড়ায়। আলুর ‘রাজা’ ফ্রেডেরিক দ্য গ্রেট অনেকেই মনে করেন, প্রুশিয়ার রাজা ফ্রেডেরিক দ্য গ্রেটই জার্মানিতে প্রথম আলু এনেছিলেন। কাহিনি বলে, তিনি আলুর বাগান পাহারা দিয়ে সাধারণ মানুষকে উসকে দেন আলু ‘চুরি’ করতে। যাতে তারা আলুর গুরুত্ব বুঝতে পারে। তাই তাকে বলা হয় ‘কার্টফেল ক্যোনিগ’ বা আলুর রাজা। কিন্তু ইতিহাসবিদেরা এই গল্পকে মিথ্যে বলে আখ্যায়িত করেন। ইতিহাস বলে, রাজা ফ্রেডেরিক নিজেই কখনো আলু খেতেন না, আর আলু জনপ্রিয়তা পায় তার মৃত্যুর অনেক পরে। প্রকৃতপক্ষে, আলু আসে ১৬৫০-এর দশকে, তার প্রপিতামহের সময়ে। আর আলু জার্মান জনসাধারণের মুখে ঘর করে নেয় ১৮১৫ সালে, নেপোলিয়নিক যুদ্ধের পর। যদিও ফ্রেডেরিক দ্য গ্রেটের গল্প সঠিক না, তবুও সে কাহিনি জার্মানরা এখনও মানে। আজও প্রুশিয়ার প্রাসাদের পাশে আলু আর কাগজের মুকুট রাখা হয়, আর দোকানে পাওয়া যায় নানা আলু সম্পর্কিত উপহারসামগ্রী। এটি ইতিহাসের সঙ্গেই জার্মান সংস্কৃতির এক চমৎকার মিলনস্থান। বহু আগে থেকেই জার্মানির রান্নায় আলু কোনো সাধারণ সবজি নয়, বরং একটি প্রধান খাদ্যের অংশ। সালাদ থেকে শুরু করে কেক, ডাম্পলিং থেকে প্যানকেক- প্রায় সবখানেই আলুর ব্যবহার। অনেক পরিবারের নানি-দাদি থেকে শুরু করে আজকের প্রজন্ম পর্যন্ত আলুর রেসিপি প্রজন্মান্তরে চলে এসেছে। জার্মানিতে আলু দিয়ে বানানো মিষ্টি কেকও খুবই জনপ্রিয়। আলু আর গাজরের সংমিশ্রণে তৈরি এই কেকটি শুধু সুস্বাদু না বরং তার সঙ্গে জার্মানির ঐতিহ্যেরও অংশ।  ফ্রেডেরিক দ্য গ্রেট হয়তো বাস্তবে আলুর রাজা ছিলেন না, তবে তার নামের সঙ্গে গাঁথা আলুর গল্প ও ভালোবাসা আজও জার্মানদের হৃদয়ে গেঁথে আছে। ইতিহাসের অনেক গল্পই কল্পকথা, তবে দৈনন্দিন জার্মান জীবনে আলুর স্থান সত্যিই অমোঘ। তাই আজও কার্টফেল ক্যোনিগের গল্প শুনলে একটু হাসি থেমে যায়, আর আলুর প্রতি শ্রদ্ধা আরও বেড়ে যায় জার্মানদের । 
‘কার্টফেল ক্যোনিগ’ জার্মানির আলুর কিংবদন্তি
মেটার একজন এআই প্রকৌশলীর এত আয়!
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) আজকের প্রযুক্তিনির্ভর দুনিয়ায় উদ্ভাবনের মূল শক্তিতে পরিণত হয়েছে। স্মার্ট অ্যাসিস্ট্যান্ট চালানো, পছন্দের কনটেন্ট সাজিয়ে দেওয়া, কিংবা ভার্চুয়াল দুনিয়ায় বাস্তব অভিজ্ঞতা তৈরি করা—সব কিছুর পেছনেই আছে এআই। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে আমাদের প্রযুক্তির সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে উঠছে নতুনভাবে। আর এই পরিবর্তনকে সবচেয়ে জোরেশোরে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে মেটা। আগে যার নাম ছিল ফেসবুক, সেই মেটা এখন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং মেটাভার্সে হাজার হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করছে। তাদের লক্ষ্য— যেভাবে আমরা একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ করি, কাজ করি এবং বিনোদন উপভোগ করি, তা সম্পূর্ণ বদলে দেওয়া। এই প্রযুক্তিগুলো শুধু ভবিষ্যৎ নয়; বরং বিশ্বব্যাপী আমাদের জীবনের অংশ হয়ে উঠছে এখনই।  টেক জগতের শীর্ষ প্রতিষ্ঠানের অন্যতম মেটা। এখানে কাজ করে বিশ্বের সেরা এআই প্রকৌশলী দল। শুধু বিশ্বের পরিবর্তন করার প্রযুক্তি তৈরি করেন না, তারা পান দারুণ বেতন-ভাতাও, যা শুনলে অনেকেরই চোখ কপালে উঠবে। মেটার এআই প্রকৌশলীরা মূলত কাজ করেন ন্যাচারাল ল্যাঙ্গুয়েজ প্রসেসিং, কম্পিউটার ভিশন ও আধুনিক ডিপ লার্নিং মডেলের মতো জটিল ক্ষেত্রে। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে তারা তৈরি করেন কন্টেন্ট রিকমেন্ডেশন, ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ও অন্যান্য সেবা, যা কোটি কোটি মানুষের দৈনন্দিন জীবন প্রভাবিত করে। সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল এইচ-১বি ভিসা সংক্রান্ত নথি থেকে জানা গেছে, মেটার একজন শীর্ষ এআই গবেষণা প্রকৌশলী বছরে ৪ লাখ ৪০ হাজার ডলার পর্যন্ত বেসিক বেতন পান। শুধু তাই নয়, বিশেষ করে এআই ও প্রযুক্তি গবেষণাভিত্তিক পদে কর্মরত সিনিয়রদের মেটা বড় অঙ্কের স্টক গ্রান্টও দিয়ে থাকে, যা তাদের মোট উপার্জনকে আরও বাড়িয়ে তোলে।  বেসিক বেতনে মেটার এআই প্রকৌশলীরা পেতে পারেন বছরে ১ লাখ ৩০ হাজার থেকে ১ লাখ ৬০ হাজার মার্কিন ডলার। তবে, বোনাস ও শেয়ার অপশন যোগ করলে এই আয় বেড়ে যায় অনেকগুণ। এন্ট্রি-লেভেলের প্রকৌশলীদের মোট আয় দাঁড়াতে পারে বছরে ১ রাখ ৮০ হাজার ডলারের বেশি। মাঝারি অভিজ্ঞতার প্রকৌশলী বছরে পেতে পারেন ১ লাখ ৬০ হাজার থেকে ২ লাখ ২০ হাজার ডলার বেতন, আর মোট আয় বোনাস ও স্টক অপশনসহ হতে পারে ২ লাখ ৫০ হাজার ডলারেরও ওপরে। সিনিয়র এআই প্রকৌশলী এবং গবেষকরা মেটায় উপার্জন করেন ৩ লাখ ডলারেরও বেশি, যেখানে বোনাস ও স্টক গ্রান্টগুলো মূল আয়কে বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়। মেটার এই বেতন কাঠামো শুধু বেসিক বেতনের ওপর নির্ভর করে না; বরং কোম্পানির সঙ্গে প্রকৌশলীদের দীর্ঘমেয়াদি সম্পর্ক নিশ্চিত করতে স্টক অপশন ও আর্থিক প্রণোদনা দেওয়া হয়। এতে প্রকৌশলীরা মেটার ব্যবসায়িক সাফল্যের সঙ্গে যুক্ত থাকেন এবং কোম্পানির মূল্যবৃদ্ধির সুফল পান। বেতনের পাশাপাশি মেটা এআই প্রকৌশলীদের দেয় এমন এক পরিবেশ যেখানে তারা নতুন গবেষণা ও প্রযুক্তির বাস্তব প্রয়োগ একসাথে করতে পারেন। সেরা মেধাদের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পেয়ে এআই প্রকৌশলীরা তৈরি করেন ভবিষ্যতের প্রযুক্তি, যা বিশ্বব্যাপী মানুষের জীবনযাত্রা বদলে দিচ্ছে। সারসংক্ষেপে, মেটায় এআই প্রকৌশলী হওয়া মানে টেক ইন্ডাস্ট্রির অন্যতম সেরা আর্থিক সুবিধা পাওয়া। শুরু থেকে সিনিয়র স্তর পর্যন্ত মেটার বেতন ও সুযোগ-সুবিধা প্রমাণ করে, তারা শীর্ষ প্রযুক্তি প্রতিভাকে আকৃষ্ট ও ধরে রাখার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা রাখে। তাই যখনই বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান বা এআই নিয়ে ভাববেন, মনে রাখবেন মেটার এআই প্রকৌশলীদের আয় অনেকটাই আপনার ধারণার বাইরে। 
মেটার একজন এআই প্রকৌশলীর এত আয়!
শুধু মানুষ নয়, পশুপাখিও চিন্তা করে যুক্তি দিয়ে
আমরা অনেক সময়ই মানুষকে ‘যুক্তিবাদী প্রাণী’ হিসেবে ব্যাখ্যা করে থাকি। কিন্তু নতুন এক গবেষণায় উঠে এসেছে এমন এক তথ্য, যা প্রচলিত এই ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করছে নিঃসন্দেহে। গবেষকরা বলছেন-  শুধু মানুষই নয়, পশুপাখিরাও যুক্তি দিয়ে চিন্তা করতে পারে। যুক্তি দিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া, সমস্যা সমাধান করা এবং পূর্ব অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে আচরণ পরিবর্তনের সক্ষমতা রয়েছে অনেক প্রাণীর মধ্যেই। সম্প্রতি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন একটি প্রাণীবিজ্ঞান গবেষণা দল পাখি ও স্তন্যপায়ী প্রাণীর উপর একটি দীর্ঘমেয়াদি গবেষণা পরিচালনা করে। তাদের গবেষণায় দেখা যায়, কিছু নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে পশুপাখিরা এমন সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, যা কেবল 'ইনস্টিংক্ট' বা সহজাত প্রবৃত্তির কারণে নয়, বরং চিন্তাভাবনা ও পূর্ব অভিজ্ঞতা বিশ্লেষণ করে নেওয়া হয়েছে। যেমন, ইউরোপীয় শিকারি পাখি ‘নিউ ক্যালেডোনিয়ান কাক’ নিয়ে করা পরীক্ষায় দেখা যায়, তারা যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে খাদ্য সংগ্রহে সক্ষম। এমনকি তারা কোনো সমস্যার সমাধানে বিভিন্ন উপায় যাচাই করে সবচেয়ে কার্যকর পদ্ধতি বেছে নেয়। এটা সরাসরি ‘কারণ ও ফলাফল’ বোঝার সক্ষমতাকে নির্দেশ করে। ‘যুক্তিবোধ’ কেবল মানুষের সম্পত্তি নয় গবেষণা রিপোর্টে বলা হয়, যুক্তিবোধ বা ‘লজিক্যাল থিংকিং’ এখন আর কেবল মানুষের একচেটিয়া সম্পদ বলে বিবেচিত হতে পারে না। শিম্পাঞ্জি, ডলফিন, এমনকি কিছু মাছও পরিস্থিতি বুঝে ভিন্ন আচরণ করে। যেমন, অস্ট্রেলিয়ার একদল গবেষক দেখিয়েছেন যে অক্টোপাস নিজের আশ্রয় গঠনের জন্য নারকেলের খোলস সংগ্রহ করে রাখে এবং সেটা ভবিষ্যতে ব্যবহার করে। এটি পরিকল্পিত চিন্তার এক নিদর্শন। মস্তিষ্কের গঠন ও বুদ্ধিমত্তা গবেষকদের মতে, প্রাণীদের যুক্তি দিয়ে চিন্তা করার পেছনে মূল কারণ তাদের মস্তিষ্কের নির্দিষ্ট গঠন ও নিউরোনের জটিল যোগাযোগ ব্যবস্থা। যদিও মানুষের মস্তিষ্ক বড় এবং জটিল, তবে অনেক পাখির (যেমন কাক বা তোতা পাখি) নিউরাল কাঠামো অত্যন্ত উন্নত এবং তারা মানুষের মতোই কিছু কিছু চিন্তা করতে পারে। ভবিষ্যতের দৃষ্টিভঙ্গি এই গবেষণা পশুপাখির সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ও আচরণে একটি মৌলিক পরিবর্তনের আভাস দিচ্ছে। যদি পশুপাখিরাও যুক্তি দিয়ে চিন্তা করতে পারে, তবে তাদের প্রতি সহানুভূতি ও অধিকারের চিন্তাও নতুনভাবে ভাবতে হবে। পশু অধিকার, পশুপ্রেম ও জীববৈচিত্র্য রক্ষার বিষয়গুলো আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। এই গবেষণা আমাদের নতুন করে ভাবতে শেখায় প্রাণীজগৎ সম্পর্কে আমাদের উপলব্ধি কত সীমাবদ্ধ ছিল। যুক্তি, চিন্তা ও সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা শুধু মানুষের নয়, প্রকৃতির আরও অনেক সৃষ্টির মধ্যেও বিদ্যমান। পশুপাখির বুদ্ধিমত্তা ও যুক্তিবোধকে সম্মান করেই আমাদের ভবিষ্যতের বিজ্ঞান, নীতিনির্ধারণ ও মানবিক আচরণ গড়ে তোলা উচিত। সূত্র : জার্নাল অব কম্পারেটিভ সাইকোলজি (২০২৫) 
শুধু মানুষ নয়, পশুপাখিও চিন্তা করে যুক্তি দিয়ে
গবেষণা জানাচ্ছে ‘কুল’ মানুষের ৬টি বৈশিষ্ট্য
‘কুল’ মানে কী? কে কাকে কুল বলেন? এসব প্রশ্নের অনেকটাই উত্তর পাওয়া গেল এক সাম্প্রতিক আন্তর্জাতিক গবেষণায়। গবেষণায় উঠে এসেছে, বিশ্বের নানা সংস্কৃতি ও পরিবেশের মধ্যে ‘কুল’ বা আকর্ষণীয় মানুষের মধ্যে সাধারণ কিছু গুণ খুঁজে পাওয়া যায়, যেগুলো প্রায় একরকমই। ‍তথ্য সিএনএনের। গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সাময়িকী জার্নাল অব এক্সপেরিমেন্টাল সাইকোলজিতে। গবেষণার নেতৃত্বে ছিলেন চিলির অ্যাডলফো ইবানেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক টড পেজ্জুতি। কুল হওয়ার ৬টি প্রধান বৈশিষ্ট্য বিশ্বজুড়ে প্রায় ছয় হাজার মানুষের ওপর ২০১৮ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত চলা এ গবেষণা চালানো হয়। এতে দেখা যায়, ‘কুল’ মানুষের মধ্যে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় এই ছয়টি বৈশিষ্ট্য:  # বহির্মুখিতা # ভোগবাদিতা # ক্ষমতা ও প্রভাব খাটানোর প্রবণতা # দুঃসাহস # খোলামেলা মনোভাব # আত্মনির্ভরতা অন্যদিকে, যারা ‘ভালো’ মানুষ হিসেবে বিবেচিত হন, তাদের গুণগুলো হয় ভিন্ন। তারা বেশি দায়িত্বশীল, সহানুভূতিশীল, ঐতিহ্যপন্থি এবং নিয়মমাফিক জীবনযাপনকারী। ১২টি দেশ, একই রকম ‘কুলনেস’ এই গবেষণায় অংশ নিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ভারত, কোরিয়া, মেক্সিকো, জার্মানি, চিলি, নাইজেরিয়া, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, তুরস্ক ও স্পেনের অংশগ্রহণকারীরা। প্রত্যেককে অনুরোধ করা হয়, তাদের দৃষ্টিতে একজন ‘কুল’ ব্যক্তি এবং একজন ‘ভালো’ ব্যক্তির কথা চিন্তা করতে। এরপর তারা দুটি মাপকাঠিতে সেই ব্যক্তিদের গুণাবলি মূল্যায়ন করেন—বিগ ফাইভ পারসোনালিটি স্কেল ও পোরট্রাইট ভ্যালুস কয়েশ্চেনিয়ার। সব দেশেই ফল প্রায় একই ধরনের। গবেষক টড পেজ্জুতি বলেন, ‘চীন, চিলি, যুক্তরাষ্ট্র—যেখানেই যান না কেন, কুল মানুষকে চেনার প্যাটার্নটা একই। এটি আমাদের একটা গভীর মনস্তাত্ত্বিক চাহিদার ইঙ্গিত দেয়।’ কুল মানেই সবসময় ‘ভালো’ নয় গবেষণার সহ-নেতা, অ্যারিজোনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ক্যালেব ওয়ারেন বলেন, ‘কেউ কুল হতে গেলে সাধারণত একটু পছন্দনীয় হতে হয়, যা ভালো মানুষের একটি বৈশিষ্ট্য। তবে কুলনেসের মধ্যে এমন কিছু দিকও থাকে যা সবসময় নৈতিকভাবে ইতিবাচক নয়। যেমন, ক্ষমতার মোহ বা ভোগবাদিতা।’ গবেষকরা আরও জানান, কুল হওয়া শেখানো যায় না। পেজ্জুতির মতে, এই বৈশিষ্ট্যগুলো সাধারণত স্বভাবজাত এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এগুলো পরিবর্তন করা কঠিন। কুল নাকি বিতর্কিত? গবেষণার আলোকে একজন কুল মানুষের উদাহরণ দিতে গিয়ে পেজ্জুতি বলেন, আমার মাথায় প্রথমেই ইলন মাস্ক আসেন।  তিনি বলেন, মাস্ক বিতর্কিত হলেও তার মধ্যে কুলনেসের ছয়টি বৈশিষ্ট্যই রয়েছে—প্রভাবশালী, সাহসী, আত্মনির্ভর, খোলামেলা এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অত্যন্ত সক্রিয়। এমনকি জনপ্রিয় পডকাস্ট ‘দ্য জো রোগান এক্সপেরিয়েন্স’-এ গাঁজা সেবন করে নিজের ভোগবাদিতার চিত্রও তুলে ধরেছেন মাস্ক। ভবিষ্যৎ গবেষণার দরজা খোলা পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক জোনা বার্গার বলেন, কুলনেস নিয়ে আলোচনা অনেক হয়েছে, কিন্তু গবেষণা খুব কম। এই গবেষণা একটি বড় শূন্যতা পূরণ করেছে।  অন্যদিকে, কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞানের অধ্যাপক জন ফ্রিম্যান মনে করেন, কুলনেসকে এখন সময় এসেছে ‘ভালো’ ও ‘খারাপ’ দুই দিক থেকেই বিশ্লেষণ করার। তার ভাষায়, এই শব্দটা এখন শুধু ব্যক্তিত্বের নয়; বরং সামাজিক ইঙ্গিতও। কে প্রভাবশালী, কার সঙ্গে কে যুক্ত—এসব কিছু বোঝাতে ব্যবহৃত হয় কুল শব্দটি। সোশ্যাল মিডিয়া আর ইনফ্লুয়েন্সার কালচারে এর প্রাসঙ্গিকতা আরও বেড়েছে।  সংক্ষেপে বললে, সাহস, স্বাধীনতা, উন্মুক্ততা এবং দৃষ্টিভঙ্গির প্রভাব—এই চারটি মূল স্তম্ভের ওপর দাঁড়িয়ে আছে ‘কুল’ হওয়ার ধারণা। যদিও এর কিছু গুণ বিতর্ক তৈরি করতে পারে, তবুও আজকের বিশ্বে কুলনেস অনেকের কাছেই এক ধরনের লক্ষ্য হয়ে উঠেছে।
গবেষণা জানাচ্ছে ‘কুল’ মানুষের  ৬টি বৈশিষ্ট্য
অঙ্কে এগিয়ে ছেলেরা, মেয়েরা কেন পিছিয়ে?
অঙ্কে এগিয়ে ছেলেরা, মেয়েরা কেন পিছিয়ে?
দীর্ঘ জীবন ও তারুণ্যের রহস্য জানালেন ১০২ বছর বয়সী চিকিৎসক
দীর্ঘ জীবন ও তারুণ্যের রহস্য জানালেন ১০২ বছর বয়সী চিকিৎসক
অস্ট্রেলিয়ায় ইহুদিদের উপাসনালয়ে অগ্নিসংযোগ
অস্ট্রেলিয়ায় ইহুদিদের উপাসনালয়ে অগ্নিসংযোগ
বাংলাদেশে ‘এক কিডনির গ্রাম’
আলজাজিরার প্রতিবেদন / বাংলাদেশে ‘এক কিডনির গ্রাম’