শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

ইসরায়েলকে আরও কঠোর জবাবের হুঁশিয়ারি ইরানের

কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ০৩ জুলাই ২০২৫, ০৮:২৯ পিএম
দুই দেশের পতাকা ও সামরিক যান নিয়ে গ্রাফিক্স। ছবি : সংগৃহীত
দুই দেশের পতাকা ও সামরিক যান নিয়ে গ্রাফিক্স। ছবি : সংগৃহীত

ইসরায়েলকে আরও কঠোর জবাবের হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইরান। দেশটি জানিয়েছে, ইসরায়েল যদি ইরানের বিরুদ্ধে নতুন করে কোনো আগ্রাসন চালায় তবে তারা আরও কঠিন চপেটাঘাত পাবে।

বৃহস্পতিবার (০৩ জুলাই) প্রেস টিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান মেজর জেনারেল আবদুলরাহিম মুসাভি বলেন, গত মাসে ইসরায়েল-যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ হামলার জবাবে ইরানের সশস্ত্র বাহিনী তাদের পূর্ণ সক্ষমতা ব্যবহার করেনি। ইসরায়েল গত আগ্রাসনে ভারী পরাজয়ের মুখোমুখি হয়েছে। আমরা সতর্ক করছি, তারা যদি এমন ভুল পুনরায় করে, তবে ইরানি জাতি ও সশস্ত্র বাহিনীর কাছ থেকে আরও কঠিন আঘাত পাবে।

তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ইসরায়েল ও তার মিত্ররা ইরানকে ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। তারা পরমাণু ইস্যুকে অজুহাত বানিয়ে দেশটিকে বিভক্ত করার চক্রান্ত করছে।

জেনারেল মুসাভি বলেন, ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির অনুরোধ করেছে যাতে তারা নিজেদের পুনর্গঠিত করতে পারে। কিন্তু যদি যুদ্ধ নতুন পর্বে প্রবেশ করে এবং দীর্ঘস্থায়ী হয়, তাহলে ইসরায়েলি দখলদাররা ইরানের এমন আচরণ দেখবে, যা এখনো প্রকাশ করা হয়নি।

তিনি বলেন, ইরান কখনোই তার মৌলিক নীতিমালা থেকে সরে আসবে না। এ নীতিমালার মধ্যে রয়েছে ফিলিস্তিন ও তার জনগণের প্রতি অটল সমর্থন।

উল্লেখ্য, গত ১৩ জুন ইসরায়েল ইরানে সরাসরি ও উসকানিমূলক হামলা চালায়। এতে ইরানের উচ্চপর্যায়ের সামরিক কর্মকর্তা, পারমাণবিক বিজ্ঞানী এবং সাধারণ নাগরিক নিহত হন। এর প্রায় এক সপ্তাহ পর, যুক্তরাষ্ট্র ইরানের তিনটি পরমাণু স্থাপনায় বোমা হামলা চালিয়ে যুদ্ধে প্রবেশ করে। ইরান এ আচরণকে জাতিসংঘ সনদ, আন্তর্জাতিক আইন এবং পরমাণু অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তির (এনপিটি) গুরুতর লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করে আসছে।

এসব হামলার জবাবে ইরানি সশস্ত্র বাহিনী ইসরাইল অধিকৃত অঞ্চলের বিভিন্ন কৌশলগত স্থাপনায় এবং কাতারে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের আল-উদেইদ সামরিক ঘাঁটিতে পাল্টা হামলা চালায়।

এরপর দুই দেশের মধ্যে ২৪ জুন ট্রাম্প যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেন। নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ শেয়ার করা এক পোস্টে ট্রাম্প বলেন, ‘ইরান ও ইসরায়েল একটি সম্পূর্ণ যুদ্ধবিরতিতে চূড়ান্তভাবে সম্মতি হয়েছে। প্রাথমিকভাবে এই যুদ্ধবিরতি ১২ ঘণ্টা ধরে চলবে, এরপরই যুদ্ধকে সমাপ্ত হিসেবে ঘোষণা করা হবে।’

ট্রাম্প আরও জানান, প্রথমে ইরান যুদ্ধবিরতি শুরু করবে, এরপর ১২ ঘণ্টা পর ইসরায়েলও আনুষ্ঠানিকভাবে এতে যোগ দেবে। মোট ২৪ ঘণ্টা পর এই ‘১২ দিনের যুদ্ধ’ বিশ্বব্যাপী সমাপ্ত হিসেবে স্বীকৃতি পাবে।

তিনি লেখেন, যুদ্ধবিরতির সময় দুপক্ষই শান্তিপূর্ণ ও সম্মানজনক আচরণ বজায় রাখবে। আমরা ধরে নিচ্ছি, সবকিছু পরিকল্পনা অনুযায়ী চলবে—যা অবশ্যই হবে। এ জন্য আমি ইসরায়েল ও ইরান উভয় দেশকে সাহস, ধৈর্য ও বুদ্ধিমত্তার জন্য অভিনন্দন জানাই।

এই যুদ্ধ আরও দীর্ঘায়িত হয়ে মধ্যপ্রাচ্যকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিতে পারত—এমন আশঙ্কার কথা জানিয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘এই যুদ্ধ বছর বছর ধরে চলতে পারত; কিন্তু তা হয়নি এবং কখনোই হবে না!’

মন্তব্য করুন

ইসরায়েলের সঙ্গে বড়সড় যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে ইরান
ইসরায়েলের সঙ্গে বড়সড় যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে ইরান
এরই মধ্যে ‘মধ্যপ্রাচ্যকে বদলে দিয়েছে ইসরায়েল’
এরই মধ্যে ‘মধ্যপ্রাচ্যকে বদলে দিয়েছে ইসরায়েল’
গাজা থেকে ইসরায়েলে রকেট হামলা
গাজা থেকে ইসরায়েলে রকেট হামলা
নেতানিয়াহুর ওপর খেপলেন ইসরায়েলের অর্থমন্ত্রী
নেতানিয়াহুর ওপর খেপলেন ইসরায়েলের অর্থমন্ত্রী